কুষ্টিয়ায় ১৬ মাসে ৬৭ ট্রান্সফরমার চুরি

কুষ্টিয়ায় ১৬ মাসে ৬৭ ট্রান্সফরমার চুরি

সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়েছে। ১৬ মাসে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৬৭ টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৬ টি ট্রান্সফরমারই কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচ পাম্পের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি চুরির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো চোর ধরা পড়েনি। মালামালও উদ্ধার হয়নি। চোরের কাছে অসহায় তারা।

কুমারখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির জোনাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৭টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ৫৫টি ৫ কেভিএ। যার মূল্য প্রায় ২২ লাখ টাকা। আর ১০ কেভিএ ১২টি ট্রান্সফার। যার মূল্য ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের মধ্যে মাত্র একটি আবাসিক এলাকার। আর বাকি সব কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচ পাম্পের।  প্রতিটি চুরির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ।

জোতমোড়া গ্রামের কৃষক মো. আমির ফরায়েজি বলেন, সকালে মাঠে গিয়ে দেখেন, তার সেচ পাম্পে  বিদ্যুৎ নেই। ট্রান্সফরমারটি বিদ্যুতের খুঁটিতে নেই। খোলস পড়ে আছে, কিন্তু ভিতরের কয়েল ও তেল নেই। 

জানা গেছে, গত ১৪ আগষ্ট রাতে যদুবয়রা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মাঠে কৃষক মো. আকরাম হোসেনের সেচ পাম্পের ১০ কেভিএ একটি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ছয় মাসে দুইবার তার ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। একটি ট্রান্সফরমারের দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তার ভাষ্য, চুরির আতঙ্কে রাতে ঘুম হয়না। তিনি নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানান।

যদুবয়রা পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত মঙ্গলবার রাতেও একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এ নিয়ে তার এলাকায় চলতি বছরে ৬টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোই কৃষকদের। এতে কৃষকরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কুমারখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির জোনাল কার্যালয়ের কর্মকর্তা ( ডিজিএম) মো. আনসার উদ্দিন জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিত ট্রান্সফরমার চুরি করছেন। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছেনা। চলতি বছরে ৩৯টিসহ গত ১৬ মাসে ৬৭ টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তার ভাষ্য, চক্রটি পরিকল্পিতভাবে ফাঁকা ও নির্জন মাঠের সেচ প্যাম্পের ট্রান্সফরমার গুলো চুরি করছে। চক্রটির কাছে পল্লী বিদ্যুত ও কৃষক অসহায় হয়ে পড়েছেন।

থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, দক্ষ লোক ছাড়া কেউ ট্রান্সফরমার চুরির কাজ করতে পারেনা। পুলিশ গভীরভাবে অভিযান চালাচ্ছে। খুব দ্রুতই চক্রটিকে তারা গ্রেফতার করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।  
এই কাজে পল্লী বিদ্যুতের কেউ জড়িত আছে কিনা তাও তদন্ত করছে পুলিশ বলে জানান এই কর্মকর্তা। ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, তিনি বিষয়টি জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করবেন।