জানসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিরিজ জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা

জানসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিরিজ জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা

ছবিঃ সংগৃহীত।

কেশভ মহারাজের বলে টেম্বা বাভুমার হাতে অ্যাডাম জাম্পা ক্যাচ তুলে দিতেই জয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ। আনন্দস্রোত খেলে গেলো কুইন্টন ডি ককের চেহারায়। তাকে সাধুবাদ জানালেন সতীর্থরা, গ্যালারি থেকে ভক্তরাও করতালি দিলেন, প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রাও আলিঙ্গন করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার ব্যাটার তার হোম ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ করলেন মনে রাখার মতো করে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুই ম্যাচ হারের পর চাপ জেঁকে বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাম্পে। তবে দারুণ প্রত্যাবর্তনের দৃষ্টান্ত তৈরি করে পরের দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরায়। রবিবার পঞ্চম ম্যাচ জিতে সিরিজ ৩-২ এ নিশ্চিত করে ডি কককে স্মরণীয় বিদায়ী উপহার দিলেন সতীর্থরা, মূল নায়ক মার্কো জানসেন।

ব্যাট হাতে ঝড় তোলার পর ওয়ানডেতে প্রথমবার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন জানসেন। ১২২ রানের বড় ব্যবধানে জিতে বিশ্বকাপের আগে মনোবল আরও বাড়িয়ে নিলো প্রোটিয়ারা। আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান করে তারা। জবাবে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও ৩৫তম ওভারে ১৯৩ রানে অলআউট হয়।

ব্যাটিং লাইনআপের শক্তিশালী পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত আগের দুটি ওয়ানডে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান থাকার কারণেই বোলারদের ওতো চাপে পড়তে হয়নি। 

দর্শকে ঠাসা ওয়ান্ডারার্সে শেষ ম্যাচেও একইভাবে সফল দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনশর বেশি রান করার পর জানসেনের শর্টবলে ছিন্নভিন্ন অস্ট্রেলিয়া। তাদের প্রথম পাঁচ ব্যাটারকেই প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি।

এইডেন মারক্রাম ও ডেভিড মিলারের ১০৯ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙার পর জানসেন ব্যাটিংয়ে নামেন। প্রথম ১৩ বলে ১৮ রান করলেও ওই জুটির গড়া ভিত আরও শক্ত করেন শেষ দিকের ঝড়ে। ২৩ বলে চারটি চার ও ৩ ছয়ে ৪৭ রান করেন জানসেন। অ্যান্ডাইল ফেলুকোয়ায়ো ১৯ বলে ৩৮ রান করেন দুটি চার ও চারটি ছয়ে। শেষ দুই ওভারে ৩৮ রানের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তিনশ পার হয়। 

মারক্রাম ৮৭ বলে ৯ চার ও ৩ ছয়ে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন। মিলার ৬৫ বলে চারটি চার ও তিন ছয়ে ৬৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন।

লক্ষ্যে নেমে অস্ট্রেলিয়া ভালো সূচনা করে। তিন ওভারে ৩৪ রান করেছিল তারা। জানসেন চতুর্থ ওভারে বল হাতে নিতেই বদলে যায় ম্যাচ। এক ওভারে ডেভিড ওয়ার্নার ও জশ ইংলিসকে ফেরান তিনি।

এরপর মিচেল মার্শ ও মার্নাস লাবুশেনের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিল অজিরা। তাদের বিচ্ছিন্ন করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিকরা। ২ উইকেটে ১২৪ রান করা অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২৫তম ওভারে দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৪৩ রান। মার্শের ৭১ ও লাবুশেনের ৪৪ রানের পর আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। 

শেষ দিকে স্পিন জাদু দেখান মহারাজ। ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে অজিদের গুটিয়ে দেন তিনি। ৯.১ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট নেন। জানসেন ৮ ওভারে ৩৯ রান খরচায় নেন পাঁচ উইকেট, প্রত্যাশিতভাবে ম্যাচসেরা তিনি।