বন্যায় বিধ্বস্ত লিবিয়ায় নতুন আতঙ্ক ল্যান্ডমাইন

বন্যায় বিধ্বস্ত লিবিয়ায় নতুন আতঙ্ক ল্যান্ডমাইন

সংগৃহীত

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ঘূণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে বহু সংখ্যক মানুষ।

ঝড়ের পর প্রবল বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দারনা শহর।

কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই বাঁধ ভেঙে শহরে ঢুকে পড়া পানিতে ভেসে যান অনেকে। এখন সেসব মানুষের আত্মীয়-স্বজনরা তাদের লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় শুধু দারনা শহরেই মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লিবিয়ার উপকূলবর্তী শহর দারনা। সেখানকার স্থানীয় মানুষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পান করার জন্য পানি পাচ্ছেন না তারা। যেখান থেকে পানি আসে, তার উৎসমুখে বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় ওই পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। ফলে দূর থেকে পানি আনা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের। কিন্তু দূরে যেতে তারা ভয় পাচ্ছেন, কারণ বন্যার পানির নিচে কোথায় ল্যান্ডমাইন পোঁতা আছে, তারা বুঝতে পারবেন না। বস্তুত, কোনো কোনো এলাকায় বিপুল পরিমাণ ল্যান্ডমাইন আছে বলে তারা জানিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় এক প্রশাসক জানিয়েছেন, ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। শনিবার পর্যন্ত ১৫০ জনের পেটের অসুখ হয়েছে। কিছু মানুষকে হাসপাতালেও পাঠাতে হয়েছে। বিষাক্ত পানি পান করে আরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ এখনো হয়নি। কিন্তু ল্যান্ডমাইনের ভয়ে মানুষ দূরে যাচ্ছেন না পানি আনতে।

সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দারনায় ৮৯১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ৩৯৮টি বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ক অফিস জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, কিছু জায়গায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে সেখানে উদ্ধারকাজই শুরু করা যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া। গদ্দাফির মৃত্যুর পর দেশে স্থিতিশীলতা আসেনি। কার্যত গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরমধ্যেই এই বন্যায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। সূত্র: রয়টার্স