শ্রম আইনকে হাতিয়ার করে ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করুন

শ্রম আইনকে হাতিয়ার করে ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করুন

সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শ্রম আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। বিচারের নামে সরকারের এই প্রতারণার অবসানের সময় এসেছে।

সোমবার বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটি বলেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা দিয়েছে। অ্যামনেস্টির বিশ্বাস, ড. ইউনূস এবং তাঁর সহকর্মীদের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে  ফৌজদারি কার্যক্রম শুরু বিচার ব্যবস্থার নির্লজ্জ অপব্যবহার। এগুলো তাঁর কর্মকাণ্ড এবং ভিন্নমতের প্রতি রাজনৈতিক প্রতিশোধেরই একটি রূপ।

অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বিবৃতিতে বলেছেন, ড. ইউনূসের মামলাটি বাংলাদেশের মানবাধিকারের বিপর্যস্ত অবস্থার প্রতীক। দেশটিতে কর্তৃপক্ষ নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব করেছে এবং সমালোচকদের বশ্যতা স্বীকার করাতে বুলডোজার চালিয়েছে। আইনের অপব্যবহার এবং প্রতিহিংসার জন্য বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার অসংগত।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুবার প্রকাশ্যে ড. ইউনূসকে আক্রমণ করেছেন। অতি সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘অনেক নোবেল বিজয়ী এখন কারাগারে’ এবং ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’ এতে বোঝা যাচ্ছে, ড. ইউনূসকেও কারারুদ্ধ করা হতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে রকম অস্বাভাবিক গতিতে বিচারকাজ চলছে, তা বাংলাদেশের অন্যান্য শ্রম অধিকার-সম্পর্কিত মামলার  সম্পূর্ণ বিপরীত। এর মধ্যে রয়েছে ২০২২ সালে চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপো এবং ২০২১ সালে নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডস ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, মালিকদের অবহেলা এবং নিরাপত্তার মান না মেনে চলার কারণে দুটি দুর্ঘটনায় প্রায় ১০০ শ্রমিক মারা গেছে। উভয় ক্ষেত্রেই কোম্পানির মালিকদের কোনো ধরনের জবাবদিহির সম্মুখীন হওয়ার কথা শোনা যায়নি। সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়েই তারা জবাবদিহি এড়িয়েছে। 

অ্যামনেস্টির মহাসচিব কালামার্ড বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার নিরলস দুর্নাম রটাচ্ছে। এতে বোঝা হচ্ছে, বর্তমান সরকার ৮৩ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ীকে হয়রানির মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যারা শ্রম অধিকার লঙ্ঘন করছে, তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। তবে ড. ইউনূসকে হয়রানি করার জন্য শ্রম আইন এবং ফৌজদারি বিচারের অপব্যবহার না করে কর্তৃপক্ষের উচিত শ্রম অধিকারের ব্যাপক হুমকি মোকাবিলা করার দিকে মনোনিবেশ করা। এর মধ্যে রয়েছে অনিরাপদ কারখানা, যেগুলো বাংলাদেশের হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন ধ্বংস করে চলেছে।