নাইজারে বিদ্রোহীদের হামলায় ১২ সেনাসহ নিহত শতাধিক

নাইজারে বিদ্রোহীদের হামলায় ১২ সেনাসহ নিহত শতাধিক

সংগৃহীত

নাইজারে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে ১২ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মোটরবাইকে করে শত শত সশস্ত্র বিদ্রোহী সেনা সদস্যদের ওপর হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

নাইজারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, পাল্টা হামলায় প্রায় একশত বিদ্রোহী নিহত হয়েছে এবং তাদের মোটরবাইক ও অস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। এর বেশি আর কোনও বিবরণ নাইজারের এই মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়নি।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মোটরবাইকে করে আসা শত শত সশস্ত্র বিদ্রোহীর হামলায় নাইজারের অন্তত ১২ জন সৈন্য নিহত হয়েছে বলে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীর হামলা ও এর জেরে সৃষ্ট লড়াইয়ে সাত সৈন্য নিহত হয়েছে এবং অন্য পাঁচজন হামলার শিকার ইউনিটকে সাহায্য করার জন্য যাওয়ার পথে নিহত হয়। মূলত হামলার শিকার ইউনিটকে শক্তিশালী করার জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনার মুখে পড়লে ওই পাঁচজন নিহত হন।

বৃহস্পতিবার একজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাসহ নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে দশজন সেনা নিহত হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী নিয়ামে থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার (১১৮ মাইল) দূরে মালি, বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারের ত্রি-সীমান্ত অঞ্চলের কাছে অবস্থিত কান্দাদজিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই এলাকাটি গত কয়েক বছরে সাহেল অঞ্চলে ইসলামি বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে দুটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, নাইজারের সেনাবাহিনী স্থল সেনাদের পাশাপাশি হেলিকপ্টার দিয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে বিদ্রোহীদের আক্রমণের জবাব দেয়। হেলিকপ্টারগুলোর মধ্যে একটিতে বিদ্রোহীরা আঘাত হানলেও সেটি ঘাঁটিতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।

রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা গত জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। আংশিকভাবে খারাপ নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তুষ্টির কারণে তারা অভ্যুত্থান ঘটায়। প্রতিবেশী মালি এবং বুরকিনা ফাসোতেও গত তিন বছরে দুটি করে অভ্যুত্থান হয়েছে। এর আগে গত আগস্টের মাঝামাঝি দক্ষিণ-পশ্চিম নাইজারে আরেকটি হামলায় অন্তত ১৭ সেনা নিহত হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত এক দশক ধরে মালির মধ্যাঞ্চল, বুরকিনা ফাসোর উত্তরাঞ্চল এবং পশ্চিম নাইজার অঞ্চল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সাহেল অঞ্চলে সক্রিয় স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা ও আইএসের সম্পর্ক রয়েছে। এই অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে এবং তারা প্রায়ই সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে থাকে।