পদত্যাগ করে এক দফা দাবি মেনে নিতে হবে : সরকারকে মির্জা ফখরুল

পদত্যাগ করে এক দফা দাবি মেনে নিতে হবে : সরকারকে মির্জা ফখরুল

পদত্যাগ করে এক দফা দাবি মেনে নিতে হবে : সরকারকে মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এবার কেউ কারো সাথে আপস করবে না। ফয়সালা হবে রাজপথে। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ভোট হবে না। তাকে এবার যেতে হবে। তার অধীনে নির্বাচন হতে দেব না। তাকে পদত্যাগ করে এক দফা এক দাবি মেনে নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। বিএনপির হাতে ক্ষমতা চাই না। জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চাই। ওরা চায়- ‘আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব’। এবার তা হতে দেয়া হবে না। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ভোটের অধিকারসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ১৪ ও ১৮ সালে আমাদের ভোট দিতে দেয়নি। সামনে একই কায়দায় নির্বাচন করতে চায়।’

কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী রোডমার্চে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী শহরের মহিপালে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ আন্দোলনে ২২ জন তরুণ নেতাকর্মীর প্রাণ গেছে। ৬৭৫ নেতাকর্মী গুম হয়েছে। তাদের স্ত্রী-বাচ্চারা দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে। ওরা কবে ফিরে আসবে? সন্ত্রাসীরা যেখানে-সেখানে সন্ত্রাস করে টিকে থাকতে চায়। পথে পথে ৪০টি গাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে। এখনো সময় আছে। মানে মানে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দাও।

নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মাদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানী, বিএনপির মরহুম নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী বেগম হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ।

জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এ খালেক, গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সদস্য অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, এ বি এম আশ্রাফ উদ্দিন, কৃষক দল সভাপতি হাসান জামিল তুহিন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফ উদ্দিন জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার সুযোগ পায় না। সরকার বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করতে চায়। খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দিতে পারলে তাদের রাস্তা পরিস্কার হয়। লন্ডনে বসে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বয়স হয়েছে। সময় নেই। তার জন্য কান্নাকাটি কেন। একজন মানুষ এভাবে বলতে পারে!’

তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া এশিয়া উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রী। সারা বিশ্বের লোক তাকে আলাদা চোখে দেখে। এজন্য বিদেশীরা তার খোঁজ-খবর নেন। বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। মা-বোনদের লেখাপড়া বিনামূল্যে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক রেখে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। এ অবস্থা তারা মেনে নিতে পারে না ‘

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ‘তলে তলে আপস হয়ে গেছে’ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তার নাম শুনেই লোকে অদ্ভুত পাখির কথা বলে। কর্মীরা ভয়ে থরথর কাঁপছে। তাদের শ্বাস দেয়ার জন্য বলেছেন। ওরা তলে তলে আপস করতে চায়।’

রোডমার্চ উপলক্ষে সকাল থেকে ফেনী ছাড়াও নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হয়। এর আগে মির্জা ফখরুল কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালকচুয়া জনসমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এরপর তিনি মিরসরাই ও চট্টগ্রামে বক্তব্য রাখছেন।