সময় শেষ : সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল

সময় শেষ : সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল

সময় শেষ : সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল

বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঘুরে ফিরে লাভ নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে। দয়া করে কেটে পড়েন। জনগণ আপনাদের টেনে নামবে।শনিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটশন মিলনায়তনে শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে রাষ্ট্রকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই জন্য সরকার আগের ক্লাস টু-থ্রিতে যে প্রবন্ধ পাঠ করা হতো সেগুলো পরিবর্তন করে ফেলেছে। জ্ঞানী দেশপ্রেমিক মানুষগুলোর জীবনীগুলোকে বাতিল করে অন্যদেশের কালচার ঢুকিয়ে দিয়েছে।

আমরা কখনো শুনিনি শিক্ষামন্ত্রী চুরি করে- এমন সমালোচনা করে তিনি বলেন, চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে জমির বিষয়ে অভিযোগ করে ডিসি বলেছেন, ৩৬৫ কোটি টাকা শিক্ষামন্ত্রীর আত্মীয়রা লোপাট করেছে। নদী কমিশনের চেয়ারম্যান, সরকারি লোক তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর মদদে প্রশয়ে তার লোকেরা ৬০০ কোটি টাকার বালু লোপাট করেছে। এদের উদ্দেশ্য একটাই শিক্ষাকে পঙ্গু করা এবং আমরা জাতি হিসেবে যেন নির্ভরশীল হতে না পারি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, একটি জাতির শিক্ষাব্যবস্থা যদি পঙ্গু করে দেয়া যায়, তবে সেই জাতিকেই পঙ্গু করে দেয়া যায়। আজ সেই দিকটা খেয়াল করুন, কেন হচ্ছে? রাষ্ট্রের যে কাঠামো সেই কাঠামোই তো এই সরকার পরিবর্তন করেছে। এই সরকারের তো কোনো জবাবদিহিতা নেই। পার্লামেন্ট একটা আছে। সেটা তোষামোদীর কারখানা। যারা অনির্বাচিত তারা গেছেন ওখানে, একটা কোটার মাধ্যমে। ওখানে গিয়ে তাদের একটাই কাজ, প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন, আর তারা বলবে, আহ, বেশ, বেশ, বেশ।

‘দেশের সাধারণ মানুষের একটা দিন কথা বলার সুযোগ থাকে, সেটা হলো ভোটের দিন। কিন্তু এই সরকার সেটাকেও নষ্ট করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোট দেয়ার অধিকারটাই শেষ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ভিসানীতি দিয়েছে যারা ভোট চুরি করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে, লুটপাট ও দুর্নীতির করেছে, দলীয়ভাবে বিচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে। সবাই এখন আতঙ্কিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আতংকের ছাপ দেখি আওয়ামী লীগের সভাপতির মাঝে।

সরকারকে ইঙ্গিত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ঘুরে ফিরে লাভ নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে। দয়া করে কেটে পড়েন। জনগণ আপনাদের টেনে নামবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মঈন খান বলেন, আমাদের সংবিধানের যে পাঁচটি মৌলিক অধিকার দেয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষা। পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও শিক্ষকদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে হচ্ছে। এটা শুধু সরকার নয় আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। কেন আমাদের সংবিধানের প্রদত্ত মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। এ প্রশ্ন আজ করতে হবে। শিক্ষার অধিকার অর্জনের জন্য এবং সেই অধিকার আদায়ের জন্য যদি সংবিধান পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করি আমরা সেটা করব। এর মধ্যে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, জার্মানির সবচেয়ে সম্মানিত পেশা হচ্ছে শিক্ষকতা এবং শিক্ষকদের সকল দায়িত্ব সরকার নিজে গ্রহণ করেছে। আজ জার্মানির এত উন্নয়নের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে শিক্ষা। যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে বিশ্বের কোনো দেশ শক্তিশালী হয় না। শিক্ষা দিয়ে শক্তিশালী হয়। আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ ও শক্তিশালী হওয়ার পেছনে রয়েছে শিক্ষা। বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকার।

শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভুইঁয়ার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মুগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।