সাপের কামড়ের পর ওঝার চিকিৎসা, প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের

সাপের কামড়ের পর ওঝার চিকিৎসা, প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের

ছবিঃ সংগৃহীত।

নওগাঁর নিয়ামতপুরে বিষধর সাপের কামড়ের পর সামিউল ইসলাম সাদিক (১০) নামের এক স্কুলছাত্রকে নেওয়া হয় পর পর দুই ওঝার কাছে। পরে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ঘুমের মধ্যে তাকে সাপে (চিতাবড়া) কামড় দিলে পরদিন মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

মৃত সাদিক উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদুলের ছেলে। সে একরামুল শাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
 
জানা যায়, রোববার সাদিক তার ভায়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মান্দা উপজেলার ঠাকুরমান্দা এলাকায় তার নানার বাড়ি বেড়াতে যায়। রাতে ঘুমের মধ্যে তাকে সাপে কাটে। এমন ঘটনায় তার স্বজনরা রাতেই তাকে প্রথমে নিয়ামতপুরের বটতলীতে এক ওঝার কাছে নিয়ে আসেন। সেখানে ঝাড়ফুঁকে কাজ না হলে পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তানোর উপজেলার তালন্দতে আরেক ওঝার কাছে। তখন সাদিকের অবস্থা সংকটাপন্ন। অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকলে রাতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে সাদিক।

সাদিকের মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন একরামুল শাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিশাদ বানু রত্না।

এ নিয়ে গত ৩ মাসে নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে মৃতের সংখ্যা ১০ জন অতিক্রম করল। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে এ সংখ্যা হবে আট। এভাবে নিয়ামতপুরের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে একের পর এক বিষধর সাপের দংশনে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জনমনে ভীতির সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০ আগস্ট ঘুমের মধ্যে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় স্কুলছাত্রী তৃষার। তার কিছুদিন আগে রাতে ঘুমের মধ্যে পুস্তইল শাহাপুর মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়। এছাড়াও কিছু দিনের ব্যবধানে জিনারপুর ইকরা হাফিজিয়া মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে রাতে ঘুমের মধ্যে সাপে কাটে চিতাবড়া সাপ। তারাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।