হামলার আগেই ইসরাইলকে সতর্ক করেছিল মিসর

হামলার আগেই ইসরাইলকে সতর্ক করেছিল মিসর

হামলার আগেই ইসরাইলকে সতর্ক করেছিল মিসর

সীমান্ত পার হয়ে হামাসের হামলা চালানোর তিন দিন আগেই বিষয়টি ইসরাইলকে সতর্ক করেছিল মিসর।হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রধান মিখায়েল ম্যাককল সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই তথ্যকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

ইসরাইলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের চালানো সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই হামলা প্রতিরোধ করতে না পারায় দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বুধবার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কট বিষয়ক গোয়েন্দা তথ্য অবহিত করা হয়। এই বৈঠকের পর ম্যাককল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জানি যে মিসর ইসরাইলকে তিন দিন আগে জানিয়েছিল যে এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটতে পারে।’

টেক্সাসের রিপাবলিকান সদস্য বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না, তবে একটা সতর্কতা দেয়া হয়েছিল।’‘তবে আমার মনে হয়, আসল প্রশ্ন হচ্ছে সেটা কোন পর্যায়ের সতর্কতা ছিল।’মিসরের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে চলতি সপ্তাহে বলেন, কায়রো বার বার ইসরাইলিদের সতর্ক করে বলেছে যে গাজা থেকে ‘বড় কোনো কিছুর’ পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের সতর্ক করে বলেছি, সহিংসতার মতো কোনো ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, এটা খুব দ্রুতই ঘটবে এবং আকারে বেশ বড় হবে। কিন্তু এই সতর্কতাকে তারা পাত্তা দেয়নি।’কায়রোর ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরাইলি কর্মকর্তারা গাজা থেকে আসা হুমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং পশ্চিম তীরের প্রতিই মনোযোগ দিয়েছে বেশি।

এ ঘটনা বিষয়ে জানেন এমন দু’জন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফাইনান্সিয়াল টাইমস বলেছে, সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার বিষয়ে শক্ত কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না।এই ভয়ংকর হামলার বিষয়ে ইসরাইলকে আগে থেকেই সুনির্দিষ্টভাবে সর্তক করা হয়েছিল এমন খবরকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা সংবাদ’ বলে বর্ণনা করেছেন নেতানিয়াহু।

মিসর গাজার সাথে থাকা সীমান্ত পারাপার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং প্রায়ই তারা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।শনিবার দেড় হাজারের বেশি অস্ত্রধারী গাজা থেকে ইসরাইলের নিরাপত্তা বেষ্টনী ডিঙিয়ে স্থল, আকাশ এবং সাগরপথে এক যোগে হামলা চালায়।

হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় এক হাজারের দুইশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাদের একমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জ্বালানি শেষ হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তারা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।এদিকে হামলার বিষয়ে জো বাইডেনের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে হামাস।

বাইডেন মঙ্গলবার বলেছেন, হামলার জবাব দেয়ার অধিকার রয়েছে ইসরাইলের। কারণ এই হামলাকে তিনি ‘সম্পূর্ণ শয়তানের কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন।হামাস বলেছে, বাইডেনের উক্তি ‘উস্কানিমূলক’ এবং গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা বাড়ানোই এর লক্ষ্য।হামাসের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা তাদের যুদ্ধ বিমানবাহী জাহাজ, জাহাজ এবং জেটবিমানগুলো পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তারা ইসরাইলকে বাড়তি যন্ত্রপাতি এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করবে।

সূত্র : বিবিসি