বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের তৃতীয় জয়

বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের তৃতীয় জয়

সংগৃহীত

চলতি বিশ্বকাপে হারের ডাবল হ্যাটট্রিক পূরণ হলো বাংলাদেশের। কোনো প্রতিরোধও যেন গড়তে পারছে না সাকিব আল হাসানের দল। প্রতি ম্যাচেই একই দৃশ্য, যেন অসহায় আত্মসমর্পণ। পাকিস্তানের সাথে পরাজয়ের মাধ্যমে সবার আগে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হলো টাইগারদের। আর টানা চার হারের পর বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপে তৃতীয় জয়ের দেখা পেল বাবর আজমের দল।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ভারতের কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাট ও বল উভয়েই ব্যর্থরা ছিল চোখে পড়ার মতো।

বাংলাদেশের ২০৪ রানের সংগ্রহটা আধুনিক ক্রিকেটে বড্ড বেমানান। ১৭.৩ ওভার ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই অনায়াসে যা পাড়ি দেয় পাকিস্তান।

অবশ্য ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি বাবর। তিনে নেমে ১৬ বলে ৯ করে মেহেদী মিরাজের বলে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে। তবে তাতে পাকিস্তানের জয়ে সমস্যা হয়নি। জয়ের ভীত আগেই গড়ে দেন দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান।

আব্দুল্লাহ শফিক আসরের চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নেন। খেলেন বলের সাথে রানের তাল মিলিয়ে। মিরাজের শিকার হওয়ার আগে ৬৯ বলে করেন ৬৮ রান। ফখর জামান তো আরো একধাপ এগিয়ে। ৫ ম্যাচ পর একাদশে ফিরেই দেখান বিধ্বংসী রূপ। খেলেন ৭৪ বলে ৮১ রানের ইনিংস।

বাকি কাজটা করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (২৬) ও ইফতেখার আহমেদ (১৭)। বিপরীতে বরাবরের মতো ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের বোলাররা। ছোট সংগ্রহ, জয়ের জন্য শুরু থেকেই চেপে ধরতে হতো। তবে তা আর হলো কই! ২১.১ ওভারে প্রথম উইকেট আসে ১২৮ রানের মাথায়।

এর আগে ব্যাটাররাও ছিলেন নিস্তেজ। টপ-অর্ডারে বিপর্যয়, মিডল অর্ডারের প্রতিরোধ, মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে রান- সেই পুরনো চিত্রনাট্য। পাকিস্তানের বিপক্ষেও বদলায়নি গল্প। ইডেন গার্ডেনে ৪৫.১ ওভারে মাত্র ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

আসরজুড়ে ব্যর্থ উদ্বোধনী জুটি। মঙ্গলবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারত বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ভাঙে ওপেনারদের যুগলবন্দী। প্রথম ওভারেই শাহিন আফ্রিদিকে ডাক উপহার দেন তানজিদ তামিম।

এদিকে রান করতে যেন ভুলেই গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলার পর পরের ছয় ম্যাচে তার ব্যাটে কেবল এসেছে ২৮ রান। এদিন ফেরেন ৪ রানে, তিনিও শাহিন আফ্রিদির শিকার। ৬ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

চারে নেমে ইনিংসের হাল ধরা হয়নি মুশফিকুর রহিমের। নিজের কাজটা করা হয়নি মি. ডিপেন্ডেবলের। ৮ বলে ৫ রানে হারিস রউফের শিকার তিনি। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ। পাঁচে নেমে লিটনকে নিয়ে গড়েন প্রতিরোধ। ৯০ বল থেকে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তারা। ভালোই চলছিল দু’জনের জোট। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান ইফতেখার। দলের সংগ্রহ তিন অঙ্ক পার হতেই ফেরান লিটনকে। ৬৪ বলে ৪৫ রান করে আউট হন লিটন।

ফিফটি পূরণ করে ফেরেন মাহমুদউল্লাহও। ৭০ বলে ৫৬ রানে শাহিন আফ্রিদির তৃতীয় শিকার হন তিনি। সাতে নেমে টেকেননি তাওহীদ হৃদয়ও। উসামা মিরের শিকার হয়ে ফেরেন ৩ বলে ৭ করে। ৩১.৩ ওভারে ১৪০ রানে ৬ উইকেট হারায় দল।

শুরুটা নড়বড়ে হলেও ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন সাকিব। মেহেদী মিরাজের যুগলবন্দীতে যোগ হয় ৪৫ রান। রানের গতিও গড়ে প্রায় ছয় ছু্ঁই ছুঁই। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলকে বিপদে ফেলে হারিসের বলে ক্যাচ দিয়েছেন ৬০ বলে ৪৩ করে। আসরের ছয় ম্যাচে পঞ্চমবার শর্ট বলে ফিরলেন সাকিব।

৩৯.৩ ওভারে সাকিব ফিরলে দলকে দুই শ’ ছুঁয়ে ফেরেন মেহেদী মিরাজ। ৩০ বলে ২৫ রান করেন তিনি। তাসকিন-মোস্তাফিজও আর টানতে পারেননি দলকে।