চা উৎপাদনে রেকর্ডের হাতছানি

চা উৎপাদনে রেকর্ডের হাতছানি

সংগৃহীত

অনুকূল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, সুষম তাপমাত্রা এবং চা বোর্ডের সঠিক নজরদারির ফলে চলতি মৌসুমে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, চা উৎপাদনে বছরে প্রায় ২ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস চায়ের ভরা মৌসুম। এ বছর নির্ধারিত সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসেও প্রচুর বৃষ্টি ছিল; যা চলতি মৌসুমে চা উৎপাদনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চা শিল্পাঞ্চলে ২ হাজার ৩৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে বৃষ্টি না হলেও ফেব্রুয়ারিতে ১০০ মিলিমিটার, মার্চে ১১৩, এপ্রিলে ৯৯, মে মাসে ১৮৬, জুনে ৯৯৫, জুলাইয়ে ৩০৭, আগস্টে ৩৭৫ এবং সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখ পর্যন্ত ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ফলে ভরা মৌসুমে চা গাছের কুঁড়ি দ্রুত বের হয়েছে। বেড়েছে পাতা তোলার পরিমাণ।

চা বোর্ড জানায়, চলতি মৌসুমে দেশের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৫৪ লাখ ৯০ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদন হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং চা শিল্পে উৎপাদনের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে। এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে দেশের চা শিল্প ১৬৯ বছরের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে।

২০২১ সালে দেশে সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি চা উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছিল। চা বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবার সব রেকর্ড পেছনে ফেলে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।

চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন, বর্তমানে যে হারে চা উৎপাদন হচ্ছে, তা থেকে সহজেই অনুমান করা যায়, চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে রয়েছে বাংলাদেশ।

আতিয়াবাগ চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম জমাদ্দার জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আকিজ গ্রুপের চারটি বাগানেই চায়ের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ভ্যালি সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল জেমস ফিনলের ভাড়াউড়া চা ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, দুটি পাতা ও একটি কুঁড়িতে ভরপুর চায়ের গাছ। বাগানে বাগানে চা পাতা সংগ্রহে ব্যস্ত চা শ্রমিকরা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার উৎপাদন বেশি হবে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ও চা-বিজ্ঞানী রফিকুল হক জানান, এবার সব রেকর্ড পেছনে ফেলে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।