লেবাননের সঙ্গে ড্র বাংলাদেশের

লেবাননের সঙ্গে ড্র বাংলাদেশের

সংগৃহীত

কিংস অ্যারেনায় শুরুতে বাংলাদেশের ওপর চাপ ফেলার চেষ্টা করল লেবানন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে গেল বাংলাদেশও। কোনো দলই পারছিল না প্রতিরোধ ভাঙতে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের রক্ষণের ভুলে এগিয়ে যায় লেবানন।

অবশ্য প্রতিপক্ষের আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শেখ মোরসালিনের চমৎকার গোলে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচ শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়।

অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর লেবানন ম্যাচ থেকে ইতিবাচক কিছুর আশায় ছিল বাংলাদেশ।

৭৯ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য ঠিক করলেও সুযোগ নষ্টের কারণে ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো হাভিয়ের কাবরেরার দলকে। র‍্যাংকিংয়ে ফারাক অনেক থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের দুই অর্ধেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে চলেছে। ভরা গ্যালারিতে সুন্দর ফুটবলের পসরা সাজিয়েছিল দুই দল।

ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে লেবানিজদের দূরপাল্লার কয়েকটি শট বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপাল। পাল্টা জবাব এলো স্বাগতিকদের কাছ থেকেও। বল নিজেদের পায়ে রেখে জামালদের লেবাননকে চাপে রাখার চেষ্টা। 

গোলমুখে প্রথম আক্রমণ ২৪ মিনিটে। অধিনায়ক জামালের কর্নার থেকে বিশ্বনাথ ঘোষের হেড গ্লাভসে নেন গোলরক্ষক মোস্তফা মাতার।

পরের মিনিটে আরেকটি গোছানো  আক্রমণ স্বাগতিকদের। এবার বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন মোরসালিন, শট নেওয়ার সুযোগ না পেয়ে সোহেল রানার (জুনিয়র) উদ্দেশে বল বাড়ালেও লেবাননের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ এল হায়েক এসে ক্লিয়ার করে দেন। ৩৩ মিনিটে আবারও বাংলাদেশের আক্রমণ। এবার ডান প্রান্ত থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের নিচু ক্রস, গোলমুখে দাঁড়িয়ে মোরসালিন। ফাহিমের শট তার পায়ে যাওয়ার আগেই তা ফেরান কাসেম আল জেইন।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরেকটি গোছাল আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে ফয়সাল আহমেদের ক্রস, জটলার মধ্য থেকে গোলমুখে শট নিয়েছিলেন মোরসালিন; কিন্তু তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। 

চোটের কারণে দ্বিতীয়ার্ধে আর মাঠে নামতে পারেননি গোলরক্ষক মিতুল মারমা। তার পরিবর্তে নামেন মেহেদি হাসান শ্রাবণ। তরুণ এই গোলরক্ষকের জাতীয় দলের জার্সিতে এটাই প্রথম ম্যাচ। মধ্যবিরতি থেকে ফিরেই বাংলাদেশের ওপর চাপ ফেলে লেবানন। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া করিম দারউইচের শট অবশ্য বাইরের জাল কাঁপায়।

এরপর কয়েকবার লেবাননের রক্ষণে হানা দেয় বাংলাদেশ। সুযোগ আসে মোরসালিনের সামনে। কিন্তু বিশ্বনাথের পাস কিছুটা গতির হওয়ায় বল পায়ে রাখতে পারেননি। একটু পরেই জামাল ভুঁইয়াকে তুলে রবিউল হাসানকে নামান বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। গোলের জন্য চেষ্টা অব্যাহত ছিল লেবাননের। তাতে ৬৭ মিনিটে গোলও পেয়ে যায় সফরকারীরা। বদলি হিসেবে মাঠে এসে চার মিনিটের মধ্যে লেবাননকে এগিয়ে নেন মাজেদ ওসমান। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা লেবাননের দুটি প্রচেষ্টা ডিফেন্সে বাধা পেলে শ্রাবণ এগিয়ে এসে বল আয়ত্তে নিতে গিয়েছিলেন। বিশ্বনাথ ক্লিয়ারিং হেড করতে যান, তাই বলটা আয়ত্তে নিতে পারেননি। উল্টো তার বুকে লেগে বল চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো মাজেদের কাছে। ঠাণ্ডা মাথায় ফাঁকা পোস্টে বল জমা করেন বদলি নামা এই স্ট্রাইকার।

সমতা ফেরাতে অবশ্য বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। লাল-সবুজের দলের ত্রাতা হয়ে আসেন সেই শেখ মোরসালিন। লেবাননের মিডফিল্ডার জিহাদ আইয়ুবের ব্যাক পাস পেয়ে যান মোরসালিন। সামনে জায়গা পেয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে তার নেওয়ার গতির শট জড়িয়ে যায় জালে। এই তরুণের সুন্দর গোলের পর উল্লাসে ফেটে পড়ে কিংস অ্যারেনা। শেষ দিকে মোরসালিন আরেকটি সুযোগ নষ্ট না করলে আজ জিততেও পারত বাংলাদেশ। মোহাম্মদ সোহেল রানার বাড়ানো বল দূরের পোস্টে ফাঁকায় পেয়েছিলেন তিনি, তবে তা জালে পাঠাতে পারেননি। তাতে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। কিংস অ্যারেনায় এখন পর্যন্ত অপরাজিত বাংলাদেশ। চার ম্যাচে জিতেছে একটি, ড্র তিনটিতে।