শিগগিরই উদ্ধার হচ্ছেন না টানেলে আটকা ৪১ শ্রমিক

শিগগিরই উদ্ধার হচ্ছেন না টানেলে আটকা ৪১ শ্রমিক

সংগৃহীত

ভারতে ১৩ দিনের বেশি সময় ধরে টানেলে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। তাদের উদ্ধারকাজের শেষমুহূর্তে পৌঁছানোর পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে স্থগিত করা হয়েছে। এখন নতুন পরিকল্পনায় এগোতে পারে কাজ। এমনটি হলে আরও অনেকটা সময় ব্যয় হবে তাদেরকে উদ্ধারের কাজ শেষ করতে।

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর টানেলে উদ্ধার অভিযানে বারবার বাধা কেন? শ্রমিকদের এখনও কেন উদ্ধার করা গেল না? ১৩দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও শ্রমিকদের থেকে ১৪ মিটার দূরেই উদ্ধারকারীরা। 

উদ্ধারে দেরি হওয়ার কারণ কী? বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় অগার মেশিন। ফের শুক্রবার সকালে খনন কাজ শুরু হয়। তবে মেশিন ব্যবহার করে ড্রিলিং শুরু হওয়ার পরপরই আরও একবার বাধার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুক্রবার রাতেও ফের উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। এখন উদ্ধারকারী দল ম্যানুয়াল ড্রিলিং করার কথাই বিবেচনা করছেন। এই বিকল্প ব্যবহার করা হলে উদ্ধার অভিযানে আরও সময় লাগতে পারে।

উদ্ধারকারী টিম যদিও বারবার বলছে প্রায় সব বাধাই কেটে গেছে। তাদের আশ্বাস, টানেলে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক যেকোনও মুহূর্তে বেরিয়ে আসতে পারেন। এখন টানেলে ৬ ফুটের দুটি পাইপ বসানোর পর কিছুটা বিরতি পাওয়া যাবে। কিন্তু তারপরও শ্রমিকদের বের করতে লাগাতার বিলম্ব হচ্ছে। 

সুড়ঙ্গের ভেতরে ৬-৬ মিটারের দু'টি পাইপ ঢুকিয়ে দিতে পারলেই উদ্ধারকারী দলের পথ সাফ হয়ে যাবে। সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকের বেরিয়ে আসার পথ খুলে যাবে। কিন্তু সেটি এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

শ্রমিকরা গত ১৩ দিন ধরে টানেলের ভিতরে আছেন। এমতাবস্থায় মনোবিদরাও কর্মীদের মনোবল বাড়াতে চেষ্টা করছেন। শ্রমিকদের লুডো, দাবা ও তাস পাঠানো হয়েছে। টানেলের ভিতর তারা চোর-পুলিশও খেলছেন। অনেকে যোগব্যায়াম করছেন। মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতেই তারা এগুলোকে সঙ্গী করেছেন। 

চিকিৎসক দল প্রতিদিন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের স্বাস্থ্য ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। উদ্ধারকারী দল টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতিদিন ৩০ মিনিট কথা বলে।

টানেলে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে সকালের প্রাতঃরাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গরম খাবারসহ তাদেরকে সুস্থ রাখতে সবকিছু পাঠানো হচ্ছে।

উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, সবদিক দিয়েই  প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। ড্রিলিং সম্পূর্ণ হলেই একটি ১৫-সদস্যেরদল হেলমেট, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং গ্যাস কাটারসহ পাইপলাইনের মধ্যে দিয়ে ভিতরে যাবে। ভেতরে আটকে পড়া লোকজনকে বাইরের অবস্থা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, যেহেতু টানেলের ভেতরে ও বাইরে তাপমাত্রার ব্যাপক পার্থক্য থাকবে, তাই শ্রমিকদের সঙ্গে সঙ্গে বাইরে আনা হবে না।

উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজের শেষ পর্যায়ে অনেক বেশি সাবধান হতে হবে। কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। আপাতত যে জায়গায় উদ্ধারকাজ আটকে আছে তা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সতর্ক হয়ে দ্রুত কাজ সারতে হবে। উদ্ধারকাজে প্রয়োজনীয় সমস্ত সাহায্য করবে সরকার।

১২ নভেম্বর সকালে ব্রহ্মখাল-য়ামুনোত্রী মহাসড়কে নির্মাণাধীন টানেলে এই ধসের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই শ্রমিকদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু এখনো তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে তাদের কাছে ক্যামেরা পাঠিয়ে ছবি তোলা হয়েছে।