বগুড়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিএনপির সাবেক এমপি

বগুড়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিএনপির সাবেক এমপি

ফাইল ছবি

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনে বিএনপি থেকে চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলে সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত সাবেক এই সংসদ সদস্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার খবরে এলাকায় ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। 

গতকাল বুধবার দুপুরে কাহালু উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটানিং অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজের নিকট মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। 

ডা. জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, ‌‘আমি একজন চিকিৎসক। বাবার মৃত্যুর পর বিএনপি আমাকে জোর করে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছে। বিএনপি থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমার গায়ে কোনদিন কালো দাগ লাগেনি। ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। মিথ্যা সংস্কারপন্থী বানানোর অভিযোগে আমাকে বিএনপির কোনো কমিটিতেও রাখেনি। আসল সংস্কারপন্থীদের অনেকেই দলে ফিরেছেন দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছেন। অথচ আমাকে মূল্যায়ন করেনি বিএনপি। নির্বাচনী এলাকায় আমার সুনাম আছে, কর্মী-সমর্থকও আছে। একারণে এবার নির্বাচনে যাচ্ছি। আমি দাসের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। বগুড়া-৪ এর কাহালু ও নন্দীগ্রামবাসী আমার পাশে আছেন। আমি এমপি হয়ে তাদের পাশে থাকব। অতীতেও ছিলাম আগামীতেও থাকব।’

জানা গেছে, ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে ডা. জিয়াউল হক মোল্লার বাবা আজিজুল হক মোল্লা বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা গেলে উপ-নির্বাচনে জিয়াউল হক মোল্লা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বগুড়া-৪ আসনে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি সংস্কারপস্থী হিসেবে পরিচিত হলে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি পান। ২০১৮ সালে বিএনপি তাকে প্রথমে দলীয় মনোনয়ন দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে মোশাররফ হোসেনকে দেওয়া হয়। সেই নির্বাচনে মোশাররফ হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন।

জিয়াউল হক মোল্লা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন এমন গুঞ্জন এলাকায় চলছিল বেশ কয়েক দিন ধরে। অবশেষে বুধবার বিএনপির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মোল্লা সহকারী রিটানিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে গত সোমবার বগুড়া শহরের মালতিনগরে তার বাসায় নন্দীগ্রাম-কাহালু উপজেলার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপির সাবেক বেশকিছু নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বগুড়া-৪ নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কাহালু উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ৩৯ বগুড়া-৪ আসন। ১৯৭৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই আসনে মোট ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রয়ারির নির্বাচন বাদ দিলে থাকে ১০টি। তারমধ্যে বিএনপি সাত বার, জাসদ দুইবার ও জাতীয় পার্টি থেকে একবার বগুড়া-৪ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছে। যার কারণে বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটি। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫১১ জন। এরমধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪ জন ও কাহালু উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৪৭ জন।