ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করলেন ব্লিঙ্কেন

ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করলেন ব্লিঙ্কেন

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো ইসরাইলের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে এবং হতাহতের ঘটনা এড়াতে ইসরাইল সরকার যে লক্ষ্যের কথা বলেছিল, তার সঙ্গে তাদের আচরণে ফারাক থেকে যাচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে বৈঠকের পর ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন এ মন্তব্য করেন।

দক্ষিণ গাজায় ইসরাইলি বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করছে, তার সমালোচনা করতে গিয়ে ব্লিঙ্কেন এমন মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ব্লিঙ্কেন। সেখানে তিনি বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ গাজায় যে অভিযান চলছে, সেখানে বেসামরিক মানুষের সুরক্ষায় ইসরাইলের পদক্ষেপ নেওয়াটা অপরিহার্য। তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না ইসরাইল।

এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে ব্লিঙ্কেন বলেন, বেসামরিকদের রক্ষা করতে তাদের (ইসরাইল) যে অভিপ্রায় এবং যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা সত্যিকারের যে চিত্র দেখতে পাচ্ছি, তার মধ্যে ফারাক থেকে যাচ্ছে।

ইসরাইল বলছে, তারা অবশ্যই হামাসকে নির্মূল করবে। তাদের দাবি, বেসামরিক নাগরিকদের যেন ক্ষয়ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে সামরিক অভিযানের আগে সতর্কবার্তা দেওয়াসহ সাধ্যমতো সবকিছু করা হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও আলাদা করে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং হামাস থেকে বেসামরিক নাগরিকদের আলাদা করার ওপর জোর দিয়েছেন। সংঘাতের এলাকাগুলো থেকে যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদে সরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে ১৭ হাজার ১৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৬ হাজার আহত হয়েছেন। আর ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় শহরগুলোতে হামাস সদস্যদের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর লড়াই হয়েছে। এতে কয়েকশ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরার হিসাব অনুসারে ৩৫০ জন নিহত হয়েছেন। 

ইসরাইল বলেছে, খান ইউনিসে তাদের বাহিনীর হাতে কয়েকজন নিহত হয়েছেন।

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য আরব রাষ্ট্রগুলো আবারো তৎপরতা শুরু করেছে। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাবের ব্যাপারে শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত আবেদন জানিয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদেশ ইসরাইল যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করছে। তাদের দাবি, এ যুদ্ধবিরতি শুধু হামাসকেই সুবিধা দেবে। মিসরসহ আরব রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শুক্রবার ওয়াশিংটনে ব্লিঙ্কেনের বৈঠক হওয়ার কথা আছে।