যুদ্ধে ইসরায়েলকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হচ্ছে: নেতানিয়াহু

যুদ্ধে ইসরায়েলকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হচ্ছে: নেতানিয়াহু

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিনই নিহত হচ্ছেন। শুধুমাত্র গত শুক্রবার ও শনিবার হামাসের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ১৪ ইসরায়েলি সেনা।

এই পরিস্থিতিতে গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, গত শুক্রবার থেকে গাজায় এক ডজনেরও বেশি ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত শনিবার ৯ সেনা ও এক প্যারামিডেক নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ এই প্রাণহানির ঘটনায় গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সংখ্যা ১৫৪ জনে পৌঁছেছে।

বিবিসি বলছে, গত শনিবার ছিল গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলে সামরিক বাহিনীর জন্য সবচেয়ে মারাত্মক ও প্রাণঘাতী দিনগুলোর মধ্যে একটি। তবে এরপরও গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া ‘কোনও  বিকল্প খুঁজে পাচ্ছেন না’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

এদিকে, গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, রোববার ভূখণ্ডটির মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এছাড়া অবিরাম এই হামলায় ৫৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই পরিস্থিতিতে সর্বশেষ ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রাণহানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন: ‘গাজায় চলমান যুদ্ধে খুব কঠিন একটি দিনের পর আজ (রোববার) ছিল কঠিন সকাল।’

তার দাবি, ইসরায়েলি বাহিনী ‘শেষ পর্যন্ত’ পূর্ণ শক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে। এসময় তিনি হামাসকে নির্মূল করার এবং গাজায় আটক বন্দিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার বিষয়ে তার লক্ষ্যগুলোও পুনর্ব্যক্ত করেন।

ইসরায়েলি এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে স্পষ্ট করে বলতে দিন: এটি (গাজায়) দীর্ঘ যুদ্ধ হবে।’

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা ৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এছাড়া গত শনিবার ইসরায়েল জানায়, চলমান স্থল অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭০০ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরইমধ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডস জানিয়েছে, তাদের স্নাইপাররা দখলদার তিন ইসরায়েলি সেনাকে গুলি করেছে। যার মধ্যে একজন মেজরও রয়েছেন। রোববার জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পের আল-কাসাইব এলাকায় তাদের গুলি করা হয়।

জাবালিয়ায় গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও বর্বরতা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। এরমধ্যেই এক মেজরসহ তিন সেনাসদস্যকে গুলি করার কথা জানাল হামাস। তবে এই সেনারা নিহত হয়েছেন কি না—  সে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেনি হামাস।