দশমিনায় জালে মিলছে না ইলিশ, দিশেহারা জেলেরা

দশমিনায় জালে মিলছে না ইলিশ, দিশেহারা জেলেরা

সংগৃহীত

তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে শত শত জেলের জালে মিলছে না আশানুরূপ মাছ। সারাদিন ও রাতে নদীতে জাল ফেলে প্রায় খালি হাতেই অনেক জেলে নদী তীরে ফিরে আসছে। এতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হাট-বাজার। অপরদিকে জেলে পরিবারগুলো ঋণের কিস্তি ও দাদনের দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

দশমিনা উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে গত বছর এই দিনে দিন-রাত ইলিশ বেচা-কেনায় ব্যস্ত থাকতো ক্রেতা ও বিক্রেতা সেখানে এখন শূন্যতা বিরাজ করছে। ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্যে নদীতে ২২ দিন সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘদিন পার হলেও জেলেদের জালে মিলছে না কোনো ইলিশ। মাছ শিকার না হওয়ার ফলে মাছের আকাল বলে দাবি করছে জেলেরা। মাছ না পাওয়ায় হাজার হাজার জেলে পরিবারের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ইলিশের আমদানি না হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলে ও আড়ৎদাররা।

মাছ বিক্রির ঘাটসহ বিভিন্ন হাটে ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে তেমন মাছ নেই বললেই চলে। জেলে ও আড়ৎদাররা অলস সময় পার করছেন।

এই সময় জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে অনেক দিন কিন্তু নদীতে মাছ নেই। সারাদিন নদীতে জাল ফেলে এবং মাছ শিকার করলে দুই থেকে চারটা মাছ পাওয়া যায়। তা দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকার তেলের খরচও জোগাড় করা যায় না।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় ১০ হাজার ১৭০ জন জেলে রয়েছে। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞার সময় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার জেলেকে ২০ কেজি হারে সরকারি চাল দেয়া হয়। এদিকে, জেলেদেরকে দাদন দিয়ে এখন বেকাদায় পড়ছে দাদন ব্যবসায়ীরা। মাছ ধরা না পড়ায় তারা মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না।

স্থানীয় জেলেরা জানান, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। আমাদের সংসার চালাতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে পরিবার পরিজন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কিভাবে চলবো সে চিন্তায় আছি।

এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মিরাজ খান বলেন, তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে কোনো মাছ নেই। জেলেরাসহ আমরা মৎস্য ব্যবসায়ী খুব কষ্টে আছি।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে জীববৈচিত্রের ওপর ভারসাম্যহীন আঘাতের এবং তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে গভীরতা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে নদীতে ইলিশ মাছের অকাল দেখা দিয়েছে। উপজেলার নদী সীমার ৮/১০টি স্পট আছে সেগুলো দিন দিন ভরাট হয়ে গেছে। এই স্পটগুলো ড্রেজিং করলে আবার নদীতে ইলিশের দেখা মিলতে পারে এই কর্মকর্তা এমনটাই মনে করছে।