হাতে তীব্র যন্ত্রণা-অসাড়ভাব কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

হাতে তীব্র যন্ত্রণা-অসাড়ভাব কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

ছবিঃ সংগৃহীত।

শীত আসতেই অনেকে ভুগছেন হাতের যন্ত্রণায়।হঠাৎ করেই হাতের কব্জিতে কিংবা জয়েন্টে ব্যথা ও ঝিনঝিনভাব কিন্তু সাধারণ কোনো লক্ষণ নয়।

 

এটি হতে পারে কারপাল টানেল সিনড্রোম। সঠিক চিকিৎসায় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, তবে এর চিকিৎসা করতে হবে দ্রুত।

কারপাল টানেল সিনড্রোম কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে, কারপাল টানেল সিনড্রোম এর কেন্দ্রীয় চরিত্র মিডিয়ান নার্ভ। এই নার্ভ বা স্নায়ু,হাত থেকে কব্জি হয়ে ছড়িয়ে গিয়েছে। তবে কব্জিতে ঢোকার সময় টানেল বা সুড়ঙ্গের মতো ছোট অংশ দিয়ে প্রবেশ করে মিডিয়ান নার্ভ।

 

কোনো কারণে টানেলের মধ্যকার মিডিয়ান নার্ভে চাপ পড়লে কারপাল টানেল সিনড্রোম দেখা দিতে পারে, বলে মত চিকিৎসকদের। এই সমস্যার একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

তবে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের কাজ বা পেশার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যার ঝুঁকি বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগেন কারপাল টানেল সিনড্রোমে।

এর লক্ষণ কী কী?

 

একটি স্নায়ুর দুটি দিক থাকে। একটি সেনসরি, আর একটি মোটর। সেনসরি অংশ নানা ধরনের সংবেদন পরিবহণ করে। আর মোটর কম্পোনেন্টের কাজ হলো, পেশির কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ।

 

মিডিয়ান নার্ভের যদি সেনসরি অংশে চাপ পড়ে, তাহলে সংবেদনে সমস্য়া দেখা দেবে। যেমন- হাত ঝিনঝিন করবে। আর মোটর অংশে চাপ পড়লে পেশির কাজকর্ম ধাক্কা খাবে। অর্থাৎ আঙুলগুলোয় অসাড়ভাব দেখা দেবে।

সাধারণভাবে কারপাল টানেল সিনড্রোমের অন্যতম চেনা উপসর্গগুলো হলো-

 

১. তালু বা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বা তর্জনী অথবা মধ্যমায় ঝিনঝিন করা, অসাড় ভাব

২. হাতে কিছু ধরে রাখতে সমস্যা

৩. আঙুলে শক লাগার মতো অনুভূতি

৪. হাতে ঝিনঝিনে ভাব

৫. ব্যথা ও যন্ত্রণা।

কাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি?

 

বিশেষজ্ঞরা জানান, নির্মাণ শ্রমিক, উৎপাদন শিল্পের কাজে জড়িত কর্মীদের এই সমস্যার ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাদের মধ্যে মাউস বা কি-বোর্ডের ব্যবহার বেশি হলেও এ ধরনের অসুবিধা হতে পারে।

 

নারীদের ক্ষেত্রে খুন্তি নাড়ানো, জামা-কাপড় ধোয়া ইত্যাদির মতো কাজ যেখানে কব্জি বেঁকানোর দিকে বেশি জোর দিতে হয়, সেখানেও এই সমস্যা হতে পারে।

এর চিকিৎসা কী?

 

এটি চিকিৎসার একাধিক উপায় আছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এক্ষেত্রে মোট তিনটি বিষয়ের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন-

 

লাইফস্টাইলে বদল

 

যে মুভমেন্টের কারণে সমস্যা, তা পুরোপুরি বন্ধ না করতে পারলেও কমিয়ে ফেলা। একটানা বেশিক্ষণ ওই কাজ করা যাবে না।

 

ওষুধ

 

থাইরয়েড বা ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে। পাশাপাশি সিনড্রোমের লক্ষণ কমাতেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া দরকার।

 

সার্জারি

যে টানেল ও স্নায়ুর উপর নিয়মিত চাপ পড়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তার রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি করারও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা