না ফেরার দেশে ফুটবলার জহিরুল হক

না ফেরার দেশে ফুটবলার জহিরুল হক

ছবি: সংগৃহীত

ফুটবল ক্যারিয়ারের বর্ণাঢ্য একটা সময় পেছনে ফেলে বার্ধক্যে পৌঁছেছিলেন জহিরুল হক। বেশ কয়েক বছর আগে মিডিয়াতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘যেটুকু চেয়েছি, আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি দিয়েছেন আমাকে। সুন্দর স্বাস্থ্য দিয়েছেন, আমিও নিয়মের মধ্যে থেকেছি, পরিমিত খেয়েছি সব সময়। ছেলে-মেয়েরাও এখন প্রতিষ্ঠিত।

বড় ছেলে আমেরিকা থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছে, ছোট ছেলে এমবিএ করেছে কার্ডিফে। দুই মেয়েরও ভালো বিয়ে হয়েছে। আমরা এখন বুড়ো-বুড়ি এই বড় বাড়িটাতে একা থাকি, নামাজ-কালাম পড়ি। আর পুরনো স্মৃতি রোমন্থনেই দিন কেটে যায়।

অমোঘ মৃত্যু ৮৯ বছর বয়সে সেই জহিরকেও কেড়ে নিল পৃথিবী থেকে। আজ তাঁর সহধর্মিণী ও সঙ্গী সুরাইয়া হকই জানালেন, ‘সকাল ৭টার সময় উনি চলে গেছেন। হার্টের অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ৮৮ বছর বয়সে গত বছর তাঁর হার্টে রিং পড়ানো হয়।

গত ৪ তারিখ খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লে ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই, আজ একেবারে চলে গেলেন।’ জহিরুল হক ফুটবলে যখন তারকাখ্যাতি পেয়েছেন, তখনো দেশ স্বাধীন হয়নি। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সময়টা খেলেছেন মোহামেডানে। মোহামেডানে ডাক পাওয়ার আগেই পূর্ব পাকিস্তান দলে তাঁর খেলা হয়ে গিয়েছিল। খেলেছেন পাকিস্তান জাতীয় দলে।

আগা-গোড়া ডিফেন্ডার  ছিলেন। কবির-আশরাফ-মারী ত্রয়ী যখন মাঠ মাতাচ্ছেন, সাদা-কালোর সেই দলের ডিফেন্স সামলেছেন তখন জহির। ১৯৬০ থেকে ১৯৭৬ সাল অবধি খেলেছেন মোহামেডানে। সাতবার লিগ জিতেছেন। অধিনায়কত্ব করেছেন চার থেকে পাঁচ বছর। 
১৯৬০ সালেই পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন করাচিতে স্বাগতিকদের হারিয়ে। এরপর চট্টগ্রামের হয়ে জিতেছিলেন বিভাগীয় শিরোপা কুমিল্লায় পেশোয়ারকে হারিয়ে। ’৬১ সালে পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে বার্মার বিপক্ষে খেলেন তিন ম্যাচ। পরের বছর রানার্স আপ হয়েছিলেন মারদেকা কাপে। পঞ্চাশ-ষাট দশকের সেই কৃতী ফুটবলার আজ বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।