জাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরুর দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বয়কট

জাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরুর দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বয়কট

ফাইল ছবি

সশরীরে ক্লাস শুরু করার দাবিতে ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে ক্লাস বয়কটের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, গণিত বিভাগ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু ও তুলনামূলক সাহিত্য, বাংলা বিভাগ, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ ও অর্থনীতি বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, আইআইটি, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, দর্শন বিভাগ, আইআর বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, সিএসই বিভাগ, ফার্মেসি বিভাগ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বয়কট করেছে।

এর আগে, কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে তিনটি দাবি জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। সেগুলো হলো- জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে হল বরাদ্দ দিয়ে অফিসিয়ালি অফলাইন ক্লাস শুরুর নোটিশ দিতে হবে, জানুয়ারির ৩০ তারিখের মধ্যে অফলাইনে ক্লাস শুরু করতে হবে এবং ক্লাস শুরুর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা নেয়া যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামিম ইয়াসীর লাবিব বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এই আবাসন সুবিধাই যে আমাদের জন্য কাল হয়ে দাড়াবে তা আমরা কেউই আঁচ করতে পারি নি। আবাসিক হলে সিট বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাসে দীর্ঘদিন অপেক্ষমান রাখার পরও সশরীরে ক্লাস শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সকল অপেক্ষার বাঁধ ভাঙলেও এখন পর্যন্ত তারা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।

একই ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অরূপা রহমান বলেন, আমাদের পরীক্ষা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আগে হলেও আমরা এখনো ক্লাসরুমে সশরীরে যেতে পারলাম না। এর থেকে দুঃখজনক আর কি হতে পারে! এভাবেই আমরা আমাদের শিক্ষা বর্ষের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য তানজিম আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রথম থেকেই মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আসছে। তারা বিভিন্ন কাজের মধ্যে দিয়ে তাদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে। তেমনি নতুন হল চালু করা তাদের ব্যর্থতা ঢাকার একটি মাধ্যম মাত্র। তা না হলে হলের জনবল নিয়োগ দিতেই তারা পার করেছে প্রায় পাঁচ মাসের অধিক সময়। আমরা চাই অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের হলে সিট নিশ্চিত করা হোক এবং গণরুম কালচার নিপাত যাক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমি শুনেছি। নতুন হল খুলে দেয়ার পরপরই তাদের সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। নতুন হল খোলার বিষয়ে কিছু জটিলতা ছিল, সেগুলোর সমাধান আমরা করতে পেরেছি। এ মাসের শেষের দিকে হল খোলা সাপেক্ষে তাদের স্শরীরে ক্লাস শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ জুন থেকে ২২ জুন ঐ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর প্রায় ছয় মাসের অধিক সময় পার করে গত ৩০ শে নভেম্বর থেকে নানা অজুহাতে ২০২২-২৩ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।