বাবরি মসজিদের জায়গায় নতুন মন্দির উদ্বোধন সোমবার

বাবরি মসজিদের জায়গায় নতুন মন্দির উদ্বোধন সোমবার

সংগৃহীত

ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের স্থানে দেশটির হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন আগামী সোমবার (২২ জানুয়ারি)। শনিবার (২০ জানুয়ারি) দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমরা একই শহরে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা আবারও জানিয়েছেন।

দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমের সংগঠন ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের (আইআইসিএফ) উন্নয়নবিষয়ক কমিটির প্রধান হাজী আরফাত জানান, পবিত্র রমজান মাসের পর আগামী মে মাসে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এর নির্মাণে তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে।
 
১৯৯২ সালে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় অযোধ্যা শহরে হামলা চালিয়ে ষোড়শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয় দেশটির উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা। তারা বলেছেন, হিন্দু দেবতা রামের জন্মস্থানে নির্মিত প্রাচীন একটি মন্দিরের ওপর মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিলো।

মন্দিরের স্থানে মসজিদ নির্মাণের এই অভিযোগ নিয়ে দেশটিতে কয়েক দশক ধরে হিন্দু-মুসলিম বিবাদ চলে। পরে উগ্রপন্থী হিন্দুরা মসজিদটি ধ্বংস করে দেওয়ায় ভারতজুড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গায় দেশটিতে ২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে; যাদের বেশিরভাগই মুসলিম।

২০১৯ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে বলা হয়, বাবরি মসজিদ বেআইনিভাবে ধ্বংস করা হয়েছিলো। তবে মসজিদের নিচে হিন্দুদের একটি স্থাপনার কাঠামো পাওয়া গেছে। আদালত মন্দির নির্মাণের জন্য বাবরি মসজিদের জায়গা হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরের অন্য এলাকায় জমি দেওয়ার আদেশও দেন আদালত।

১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত অযোধ্যার মন্দিরটির উদ্বোধন করা হবে সোমবার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থেকে নবনির্মিত মন্দিরটির উদ্বোধন করবেন।

কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মন্দিরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও মসজিদের নির্মাণকাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন মুসলিমরা। উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় মুসলিম গোষ্ঠীগুলো মসজিদের তহবিল সংগ্রহ এবং প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরের জনশূন্য এক জায়গায় নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য রীতিমতো লড়াই করছে। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাথে সংশ্লিষ্ট হিন্দু গোষ্ঠীগুলো অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের জন্য তিন দশকেরও বেশি আগে থেকে অনুদান সংগ্রহ শুরু করেছিল। মন্দিরটির জন্য দেশটির প্রায় ৪ কোটি মানুষের কাছ থেকে ৩০ বিলিয়ন রুপি (৩৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করেছে তারা।

আইআইসিএফের সেক্রেটারি আতহার হুসেন বলেন, মিনারের মতো কাঠামোতে ঐতিহ্যবাহী নানা উপাদান যুক্ত করার জন্য পুনরায় নকশা করতে হয়েছে মসজিদের। যে কারণে এই মসজিদ প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্সে ৫০০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স।