উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করতে পারে বিএনপি

উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করতে পারে বিএনপি

ফাইল ছবি

উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করতে পারে বিএনপি। আসন্ন উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিএনপি যাবে কি না জানতে চাইলে গতকাল নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এমনই ঈঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন কখনোই শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু হবে না। সুতরাং তার অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না, সেই সিদ্ধান্ত আমাদের আগেই নেয়া আছে। বিএনপি এখনো সেই সিদ্ধান্তেই অটুট রয়েছে।

গত সোমবার আওয়ামী লীগের জরুরি কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেসব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের ভোট হতে যাচ্ছে তাতে দলীয় প্রতীক নৌকা না দেয়ার। সেক্ষেত্রে প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হলে বিএনপি কি করবে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, আমরা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনই তো সুষ্ঠু হবে না বলছি। এখন পর্যন্ত আমাদের যে সিদ্ধান্ত তা হচ্ছে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না।

সোমবার নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আমরা এখনো পর্যালোচনা করছি এবং দেখছি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১২ মার্চে শেষ হবে। আবার ১০ বা ১১ মার্চ রোজা শুরু হবে। এসব বিষয় বিবেচনা করতে হচ্ছে। প্রথম ধাপে শ’ খানেক উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাকিগুলো কয়েকটা ধাপে মে মাসে করা হবে। কারণ জুন মাসে আবার এইচএসসি পরীক্ষা। এজন্য আমরা এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চাই।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রকৃতি তুলে ধরে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন, সেই নির্বাচনের ফলাফল, প্রকৃতি, সেই নির্বাচনের নানা ধরন-আঙিক নিশ্চয়ই সবার জানা আছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এর প্রমাণ আছে। শেখ হাসিনা যতই কথা বলুক তিনি কোনোক্রমে গণতন্ত্রের বিশ্বাস করেন না। জনগণের যে শক্তি, জনগণের ইচ্ছা এটাতে তিনি বিশ্বাস করেন না। করে না বলেই আজকে দেশ-বিদেশে থেকে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের যে দাবি জানানো হয়েছে এটাতে তিনি কর্ণপাত না করে তার মাস্টার প্লান অনুযায়ী এবং তাদের প্রভুদের সমর্থন নিয়ে একটি অদ্ভুত তামাশার নির্বাচন করেছে। মানুষের কাছে সেটি হয়েছে বর্জনীয়, মানুষের কাছে সেটি হয়েছে ঘৃণ্য।

নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, তাহসিনা রুশদীর লুনা, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, আসাদুল করীম শাহিন, মনির হোসেন, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আমিনুল ইসলাম প্রমূখ নেতা।

আ’লীগ নিজেরাই নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে : মঈন খান
উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়ার প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ৭ জানুয়ারির পর আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় পরাজয় হয়েছে। পরাজয় স্বীকার করে নিজেরাই নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে। এখন তারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে না। আওয়ামী লীগের বাড়াবাড়ি এখন ধোপে টিকছে না।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ওলামা দলের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি শাহ নেছারুল হক।

মঈন খান বলেন, এখন আর বক্তব্য নয়, কাজ করবার সময়। বিএনপি রাজপথে নেমেছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে। আওয়ামী লীগের কারণে গণতন্ত্র আজ মৃত। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় বাকশাল গঠন করে মানুষের অধিকার হরণ করেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মকাণ্ড স্বাধীনতার আদর্শের বিরোধী। ৭ জানুয়ারি ইলেকশনের নামে সিলেকশন হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল করছে। সংবিধান নয় সরকারের দুর্নীতি লুটপাটের প্রীতি রয়েছে। সংবিধানের দোহাই সরকারের প্রহসন মাত্র। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক ছাড়াও ওলামা দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

জনগণের বিজয় অনিবার্য : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপির লড়াই জনগণের পক্ষের লড়াই, এ লড়াই আরো সুসংগঠিত করা হবে, অব্যাহত রাখা হবে। এতে জনগণ ও বিরোধী জোটের বিজয় অনিবার্য। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আয়োজনে ‘একতরফা নির্বাচনে গণতন্ত্র নির্বাসনে’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন ধারা সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনে ডামি প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনও ডামি, অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানও সেরকম আচরণ করছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বয়কট করার পরও সিইসি ঘুমিয়েছেন। কারণ সবই তো নির্ধারণ করা ছিল। এটা ডামি নির্বাচনের সরকার, জনগণের সরকার না। গণতন্ত্র নিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে রসিকতার অধিকার জনগণ কাউকে দেয়নি। সরকার ঠিক করছে কে বিরোধীদল হবে। সংগঠনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সংগঠনের নেতারা এতে বক্তব্য দেন।