গাজায় নিহত ২৬২৫৭, ভেঙে পড়তে পারে নাগরিক শৃঙ্খলা

গাজায় নিহত ২৬২৫৭, ভেঙে পড়তে পারে নাগরিক শৃঙ্খলা

সংগৃহীত

ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে যদি আরো অনেক বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এমন অবস্থায় সেখানে নাগরিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে। ৭ অক্টোবর থেকে হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ২৫৭ জনে।

গাজার জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রধান অজিথ সুংহায়ে বলেছেন, 'এলাকাটি পরিপূর্ণ হয়ে আছে।এখানে কোনো জায়গা নেই।খাবার নেই। মানুষ ক্ষুদ্ধ হয়ে আছে। এখানে নাগরিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে, নাগরিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে।' খবর আনাদুলু এজেন্সির

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার আগে রাফায় তিন লাখের কম লোকের বসবাস ছিল। বর্তমানে সেখানে ১৩ লাখ মানুষ অবস্থান করছে।

অজিথ সুংহায়ে গাজায় তার দায়িত্ব পালন শেষে তার কর্মস্থল জর্ডানের আম্মানে ফিরে এসেছেন। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি খান ইউনিসে অনেক মানুষ দেখতে পেয়েছেন, যারা ব্যাপক ইসরায়েলি বোমা বর্ষণ ও প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, 'তারা হতাশ, ক্ষুব্ধ এবং চিন্তিত'।

তিনি আরও বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। খান ইউনিসে এখন যা ঘটছে, এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে, অবস্থার উন্নতি না হলে, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে আবার সরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।'

পালিয়ে যাওয়ার জন্য আর খুব বেশি জায়গা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রাফার একদিকে ভূমধ্যসাগর, অন্যদিকে মিশর সীমান্ত। খান ইউনিস এবং অন্যান্য জায়গা থেকে যদি প্রচুর সংখ্যক মানুষ সেখানে স্থানান্তরিত হয়, তবে অবশ্যই একটি বিশাল বিপর্যয় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।'

ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ায়, অনেক মানুষ আশ্রয়ের জন্য রাফায় এসেছেন। তিনি বলেন, তাদের আর কোনো বিকল্প ছিলো না। সেখানকার সড়কের ওপর ও নর্দমার আশেপাশে চরম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে থাকা লোকজনের বর্ণনা দেন তিনি।

গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করার পর থেকে ২৬ হাজার ২৫৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৬৪,৭৯৭ জন।

গত তিন মাসে অনেক হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক বোমা হমলার শিকার হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, গাজার ৩৬টি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি আংশিকভাবে চালু আছে।

ডব্লিউএইচও'র মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেন, 'গাজার হাতে গোনা কয়েকটি সচল হাসপাতাল খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রয়েছে। এই সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে এখানে প্রায়শই রোগী এবং প্রয়োজনীয় সরবরাহ প্রবেশে বাধার মুখোমুখি হতে হয়।'

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, তারা গাজার পরিস্থিত নিয়ে কাজ করছে। তবে আন্তজার্তিক পর্যায় থেকে আরও অনেক কিছু করা সম্ভব। তিনি জানান, 'এই ভয়াবহতার অবসান ঘটাতে, প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি তাদের প্রভাব প্রয়োগের জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছেন হাইকমিশনার।'