প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বিজিপির সংখ্যা বেড়ে ১১৭

প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বিজিপির সংখ্যা বেড়ে ১১৭

সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১১৭ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের ১১৭ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।

এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে বান্দরবানের এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাছিনা বেগম (৫২) ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এছাড়া নিহত রোহিঙ্গা পুরুষের (৫৫) পরিচয় জানা যায়নি।

এর আগে গতকাল রোববার গোলাগুলির সময় নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু এলাকায় বেশ কয়েকটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে ওই এলাকার যুধিষ্ঠির ধরের ছেলে প্রবীর ধর নামের একজন আহত হন।

এদিকে মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা আলোচনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা সেই আলোচনার জন্য এবং তাদের (বিজিপি সদস্যদের) ফেরত পাঠানো বা ফেরত পাঠানো না গেলে অন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটা নিয়ে কথা বলছি। গতকাল (রোববার) যেটা হয়েছিল, মর্টারশেলে আমাদের একজন মারা গেছে। ওদেরও একজন মারা গেছে।

সীমান্তে উত্তেজনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বা প্যারামিলিটারি বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যদের ধৈর্য ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বর্ডারের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সোমবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করেছে বিদ্রোহীরা। এছাড়া গত তিন দিনে বিদ্রোহীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে দেশটির অন্তত ৬২ জন সেনা। মিয়ানমারজুড়ে হামলা জোরদার করেছে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহীরা।

গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।