রোজায় সুস্থ থাকতে সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

রোজায় সুস্থ থাকতে সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

ছবি: সংগৃহীত

বছর ঘুরে চলে এসেছে মাহে রমজান। এই মাসের ইবাদত-বন্দেগীর ফজিলত তুলনামূলক বেশি। কিন্তু আপনি চাইলেই কাঙ্ক্ষিত ইবাদত করতে পারবেন না, যদি শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকেন। এমনকি রমজানের শুরু থেকে জীবনযাপনে সচেতন না হলে ভালো স্বাস্থ্যও খারাপের দিকে যেতে পারে। জীবনযাপনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, আমরা যা খাই। 

সেহরিতে যেমন তেমন খাবার খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি আছে, যা দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি ইবাদতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে রোজাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সেহরিতে কী খাবেন, কী খাবেন না তার একটা তালিকা দেয়া হলো।

সেহেরিতে যা খাবেন

পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল ও সবজি: 
সেহরিতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে এমন ফলমূল ও শাকসবজি খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরা থাকবে। এছাড়া সবলও থাকবেন, যার ফলে সহজে ক্লান্তিতে ভুগবেন না। কিছু পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলো- কলা, পালংশাক, ব্রোকলি, খরমুজ, মটর ও মাশরুম।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: 
শরীরকে তেজি ও কর্মক্ষম রাখতে সহায়তা করে প্রোটিন। এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে থাকে। রোজা ভেঙে ফেলা বা না রাখার মতো পরিস্থিতি এড়াতে সুস্থ থাকা জরুরি। কিছু প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হলো- ডিম, মুরগির মাংস, দই, পনির, বাদাম, বাদামের মাখন ও ডাল জাতীয় খাবার (বিশেষত লেগিউম)।

ফাইবার সমৃদ্ধ ফল ও সবজি: 
রোজায় দীর্ঘসময় পেট খালি থাকে। এরপর ইফতারের সময় উচ্চ ক্যালরির খাবার খেলে পরিপাকতন্ত্র তালগোল পাকাতে পারে, বিশেষ করে রমজানের শুরুতে। এই সমস্যা এড়াতে সেহরির খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি রাখতে হবে।এসব খাবার কেবলমাত্র পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থই রাখবে না, শরীরকে সারাদিন শীতলও রাখবে। আপনি প্রচুর ফাইবার পেতে আপেল ও অন্যান্য ফল, ব্রোকলি ও অন্যান্য শাকসবজি, কিডনি বিনস ও ওটস খেতে পারেন। ছোলাতেও প্রচুর ফাইবার রয়েছে। কেবল ইফতারেই ছোলা খাবেন এমনটা নয়, বরং রোজায় ভালো থাকতে সেহরিতেও ছোলা খেতে পারেন।

সেহরিতে যা খাবেন না-

চা-কফি ও কোমল পানীয়: 
সেহরিতে কোমল পানীয় পান করলে ওবেসিটি ও অ্যাসিডিটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। মনে রাখতে হবে- সুস্বাদু পানীয় নয়, বরং পর্যাপ্ত পরিমাণে সাধারণ পানি ছাড়া রোজা রাখা বেশি কষ্টদায়ক হতে পারে। ক্যাফেইন হলো এমনকিছু যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে না, বরং পিপাসা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাছাড়া চোখের ঘুমও কেড়ে নিতে পারে। তাই সেহরিতে যথাসম্ভব কার্বনেটেড পানীয়, চা ও কফি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

মসলাদার, ভাজা খাবার: 
মসলাদার, ভাজা খাবার অ্যাসিডিটি ছাড়া আর কী দিতে পারে? এসব খাবারে বিশেষ বা পর্যাপ্ত পুষ্টি নেই, বরং আছে প্লেইন ক্যালরি- যা আপনাকে বেশিক্ষণ সবল রাখতে সক্ষম নয়। যারা ইতোমধ্যে অ্যাসিডিটিতে ভুগছেন তারা সেহেরিতে মসলাদার, ভাজা খাবার খেলে সমস্যাটি প্রকট হতে পারে। তাই রোজায় অ্যাসিডিটি এড়াতে সেহরিতে সিঙ্গাড়া, রোল, পিজ্জা, বার্গার ও অন্যান্য ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। এমনকি গুলাব জামুনের মতো মিষ্টি খাবারও সেহরির খাদ্যতালিকায় থাকার উপযুক্ত নয়।

উচ্চ লবণের খাবার: 
সেহরিতে অতি লবণাক্ত খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ মাত্রায় লবণ খেলে পিপাসা বেড়ে যায়। এমনকি সেহরিতে প্রচুর পানি পান করলেও। রোজা অবস্থায় ঘনঘন পিপাসা পেলে কাজের উৎপাদনশীলতা ও সৃজনশীলতা কমে যেতে পারে। তাছাড়া লবণ শরীরে পানি জমিয়ে ফেলে ও কিছু শারীরিক সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই রমজান মাসে সুস্থ থাকতে সেহরিতে উচ্চ লবণের খাবার খাওয়া উচিত নয়, এমনকি ইফতারেও। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি