ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : ৭ দিন ধরে তালাবদ্ধ মানবসম্পদ বিভাগ

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : ৭ দিন ধরে তালাবদ্ধ মানবসম্পদ বিভাগ

প্রতীকী ছবি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও হেনস্তার ঘটনায় শিক্ষার্থী আন্দোলনে সাত দিন ধরে তালাবদ্ধ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। এ কারণে বিভাগটিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৬টি ব্যাচের ২৮৪ জন শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিনষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠে মানবসম্পদ ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহ’র বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে গত ৪ মার্চ আন্দোলন শুরু করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে ওই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে ৫ মার্চ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এই কমিটি গঠনের একদিন পর ৬ মার্চ আন্দোলনকারিরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেটসহ ভাঙচুর করে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 

এরপরও আন্দোলন অব্যাহত রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে অশালীন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনকারিরা দুই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে জুতার মালা পড়ায়।

এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বাইরে নানা আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হলে শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে শিক্ষকদের ‘সম্মান হত্যা’ হয়েছে বলে দাবি করেন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১০ মার্চ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে তালাবদ্ধ বিভাগের সামনে মানববন্ধন করেন ১১ শিক্ষক।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১২ মার্চ) মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকরা উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর সঙ্গে দেখা করে তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হল- যৌন হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক বিচার, কর্মপরিবেশ সৃষ্টি ও ভাঙচুর ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের বক্তব্য জানা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ন কবীর বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনায় অধিকতর তদন্ত কমিটিসহ দুইটি কমিটি অভিযোগের তদন্ত করছেন। প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। এ লক্ষ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্য বৈঠক করেছেন। আশা করছি দ্রুত সময়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে উঠেবে।

এ বিষয়ে ট্রেজারার ও তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. আতাউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে আছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।