পদত্যাগ করলেন আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

পদত্যাগ করলেন আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (২০ মার্চ) বিস্ময়কর এই ঘোষণা দেন তিনি। ৪৫ বছর বয়সী এই নেতা বলেছেন, সরে যাওয়ার জন্য এখনই সঠিক সময়। বুধবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেন- তিনি ক্ষমতাসীন ফাইন গেইল দলের নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। তিনি আরও বলেন, তার উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার পরপরই তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও সরে দাঁড়াবেন।

ডাবলিনে সাংবাদিকদের ভারাদকার বলেন, ‘আমি ফাইন গেইল দলের সভাপতিত্ব ও নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করছি এবং আমার উত্তরসূরি সেই পদটি গ্রহণ করতে প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথে তাওইসেচ (প্রধানমন্ত্রী) পদ থেকেও পদত্যাগ করব।’ তিনি বলেছেন, আগামী ৬ এপ্রিল দলের নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টকে বলেছেন তিনি।

৪৫ বছর বয়সী ভারাদকার বলেছেন, তার পক্ষে সরে যাওয়ার এটাই সঠিক সময়। পদত্যাগের পেছনে কারণ ঠিক কী তার বিশদ বিবরণ না দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পদত্যাগের কারণ ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক, তবে প্রধানত রাজনৈতিক।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমার মনে এখন কিছুই নেই। আমার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক পরিকল্পনাও নেই।’

২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন লিও ভারাদকার। সেসময় তিনি ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। এরপর ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে আবারও এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

আল জাজিরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যখন ভারাদকার প্রথমবার নির্বাচিত হন, তখন তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হন এবং আয়ারল্যান্ডের প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রীও তিনি। এছাড়া ভারাদকারের মা আইরিশ এবং বাবা হচ্ছেন ভারতীয়। এতে করে তিনি হচ্ছেন আয়ারল্যান্ডের প্রথম দ্বিজাতিক প্রধানমন্ত্রী।

২০১৫ সালের গণভোটে অনুমোদিত সমকামী বিবাহকে বৈধ করার প্রচারাভিযানে এবং গর্ভপাতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা ২০১৮ সালে ভোটের মাধ্যমে পাস হয়েছিল।

পদত্যাগের বিবৃতিতে ভারাদকার বলেছেন, ‘আমি গর্বিত যে আমরা দেশকে আরও ন্যায় এবং আরও আধুনিক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি।’

আল জাজিরা বলছে, ভারাদকার তার নিজের দল ফাইন গেইলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখোমুখি হয়েছেন। দলের দশজন আইনপ্রণেতা - যা মোট সংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ - ঘোষণা করেছেন, তারা পুনরায় নির্বাচনে লড়বেন না।

এছাড়া এই মাসের শুরুতে, ভোটাররা দুটি সাংবিধানিক সংশোধনীর ওপর গণভোটে সরকারের অবস্থান প্রত্যাখ্যান করে।

ভারাদকার সম্প্রতি ওয়াশিংটন থেকে ফিরে এসেছেন এবং সেখানে তিনি আইরিশ প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহ্যবাহী সেন্ট প্যাট্রিক ডে সফরের অংশ হিসাবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সাথে দেখা করেছিলেন।

অবশ্য ভারাদাকারের পদত্যাগের ফলে আয়ারল্যান্ডে আগাম নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না। তবে এমন সময়ে তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন, যখন আয়ারল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় বাকি রয়েছে। মূলত আয়ারল্যান্ডে আগামী নির্বাচন ২০২৫ সালের প্রথম দিকে আয়োজন করতে হবে।