বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দর। এতে একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছে নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটি। সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে (শনিবার, ৩০ মার্চ) প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম স্থির হয়েছে ২ হাজার ৩২ ডলারে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে নতুন ইতিহাস।

গোল্ড প্রাইস ডটকম ও সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচ্য কর্মদিবসে স্পট মার্কেটে বৈশ্বিক বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের আউন্সপ্রতি মূল্য নিষ্পত্তি হয়েছে ২০৩২ ডলারে। এখন যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। এর আগে (বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ) তা ছিল ২২২৫ ডলার। সেদিনও নতুন নজির স্থাপন করেছিল মূল্যবান ধাতুটি। এরও আগে তা ছিল ২২২০ ডলার। সেটিও ছিল একটি রেকর্ড। অর্থাৎ সম্প্রতি প্রায় প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ধাতুটির দাম।

প্রতিনিয়ত এটি এমন স্তরে উঠছে যা অতীতে কখনও দেখেননি বিশ্ববাসী। কেবল শনিবারই নয়, মার্চজুড়েই বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ছে স্বর্ণের দর। এর মধ্যে বিগত ৮ দিনেই আউন্সপ্রতি দামি ধাতুটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ৬৭ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৭৩৪৩ টাকা। গত ২২ মার্চ চকচকে ধাতুটির আউন্সে মূল্য ছিল ২১৬৫ ডলার।

সপ্তাহজুড়ে বিশ্ববাজারে বাড়লেও এখনো দেশের মার্কেটে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়নি। তবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সূত্র জানিয়েছে, বৈশ্বিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে, স্থানীয় বাজারে চাহিদা বাড়লে এবং তেজাবী স্বর্ণের দাম বাড়লে নতুন করে দর বাড়ানো হতে পারে। এজন্য আগামী কয়েকদিন স্থানীয় বাজারের চিত্র পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে আবারও বাড়ানো হলে বাংলাদেশের বাজারেও স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস তৈরি হবে। অবশ্য বর্তমানে রেকর্ড দামেই বিক্রি হচ্ছে নিরাপদশ আশ্রয় ধাতুটি।

দেশের বাজারে সবশেষ স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় গত ২১ মার্চ। এই দফায় ধাতুটির মূল্য বৃদ্ধি করা হয় ২৯১৬ টাকা। তাতে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরির দর দাঁড়ায়য় ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকা। দেশের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। এর আগে যা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৮ টাকা। সেটিও ছিল নতুন দৃষ্টান্ত।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৩০০ ডলার হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের যে রেকর্ড আমরা দেখেছি, তাতে এই বছরই আউন্সপ্রতি দর ২৩০০ ডলার হয়ে যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। মূল্যস্ফীতি চড়া রয়েছে। সেই তুলনায় ইউএস ডলারের দাম কম। ফলে স্বর্ণে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অনেক দেশ এখন ডলার বাদ দিয়ে রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণ কিনে রাখছে। ফলে মূল্যবান ধাতুটির দাম বেড়ে চলেছে।