শঙ্কায় লিচু চাষিরা

শঙ্কায় লিচু চাষিরা

ছবি- নিউজজোন বিডি

পাবনা প্রতিনিধি: লিচুর রাজধানী হিসেবে খ্যাত পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রচন্ড খরা ও তাপদাহে লিচুর গুটি ব্যাপকভাবে ঝরে পড়ছে। এতে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। রসালো ও সুস্বাদু লিচু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ঈশ্বরদীতে বৈশাখের মাঝামাঝিতে গাছে মুকুল আসে এবং চৈত্র মাসে মুকুল থেকে লিচুর সবুজ গুটি দেখা যায়। এখন লিচু গাছের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে ছোট ছোট সবুজ গুটি। এ বছর প্রতিটি গাছে রেকর্ড পরিমাণ মুকুল এসেছিল। মুকুল থেকে গুটিও বেশ ভালো হয়। তাই এবার চাষিরা লিচুর ভালো ফলনের আশায় বুক বেধেছিলেন। কিন্তু গত ২৮ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১১ দিনের প্রচন্ড তাপদাহে লিচুর গুটি ঝরে পড়তে শুরু করেছে। তাই লিচু চাষিদের স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর ঈশ্বরদীতে ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। বৈশাখ মাসে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি লিচু গাছে এবার ভালো মুকুল এসেছে। এবার লিচুর ভালো ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার লিচুগ্রাম হিসেবে পরিচিত বক্তারপুর, জগন্নাথপুর, বাঁশেরবাদা, জয়নগর, মিরকামারী, মানিকনগর, , সাহাপুর, আওতাপাড়া, চরসাহাপুরে ঢুকেই চোখে পড়ে সারি সারি লিচুর বাগান। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার লিচুর গুটি বেশি। প্রায় প্রতিটি গাছেই প্রচুর গুটি।

উপজেলার উল্লেখিত এলাকার লিচু চাষিরা বলেন,‘এবার লিচু গাছে রেকর্ড পরিমাণ মুকুল এসেছিল। চৈত্রের খরতাপে লিচুর গুটি খুব ক্ষতি হচ্ছে। এখন ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান। কারণ এভাবে গুটি ঝরে পড়া অব্যাহত থাকলে লিচু চাষিদের ভালো ফলনের স্বপ্নভঙ্গ হবে।’

তারা জানান, ‘কয়েকদিনের প্রচন্ড খরার কারণে গাছের লিচুর গুটি সব ঝরে যাচ্ছে। রাতে ও সকালে পানি ও ওষুধ স্প্রে করেও গুটি ঝরা রোধ করা যাচ্ছে না।

‘দিনে প্রচন্ড গরম আবার রাতের আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে। গরম-ঠান্ডার কারণে লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে।’

কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ীরা বলেন,‘এবার প্রচন্ড খরার কারণে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। চাষিরা গুটি ঝরা রোধ করতে আমাদের কাছে এসে পরামর্শ চাইছেন। আমরা কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গুটি ঝরা রোধে চাষিদের কীটনাশক দিচ্ছি।’

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন,‘লিচুর গুটি ঝরা রোধে চাষিদের সঠিকভাবে লিচু বাগান পরিচর্যা করা ও প্রয়োজনমতো কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’