রোজার কাজা ও কাফফারা যেভাবে আদায় করবেন

রোজার কাজা ও কাফফারা যেভাবে আদায় করবেন

প্রতিকী ছবি

একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা রাখা হলো কাজা, আর কাফফারার মানে- লাগাতার ৬০টি রোজা রাখা অথবা ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ানো। শরিয়তসম্মত ওজরে রাজা না রাখা ও ভেঙে দিলে কাজা বা ফিদিয়া দিতে হবে। আর বিনা ওজরে রোজা ভেঙে দিলে, কাজা ও কাফফারা দুটোই আদায় করতে হবে। 

তবে কাফফারা আদায় করলেও ফরজ রোজার ঘাটতি সারাজীবন থেকে যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভাঙে, তার ওই রোজার বিপরীতে সারা জীবনের রোজাও রমজানের একটি রোজার সমমর্যাদা ও স্থলাভিষিক্ত হবে না। ’(সুনানে তিরমিজি: ৭২৩) 

শরিয়তসম্মত ওজর থাকলে রোজা ছেড়ে দেওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘...আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)

কাজা রোজার বিধান 
রোজাদার যদি মুসাফির, রোগাক্রান্ত, গর্ভবতী ও দুগ্ধ দানকারী হন, সেক্ষেত্রে রোজা কাজা করার বিধান আছে। এছাড়াও বার্ধক্য, প্রাণনাশের আশঙ্কা, কেউ জোর-জবরদস্তি করে রোজা ভঙ্গ করতে বাধ্য করলে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাগল হয়ে গেলে, মহিলাদের পিরিয়ড ও প্রসব পরবর্তী রক্তস্রাব দেখা দিলে, সাপ-বিচ্ছুসহ বিষধর কোনো প্রাণী দংশন করলে কিংবা জিহাদরত অবস্থাসহ যেকোনো শরিয়তসম্মত কারণে রোজা না রাখলে বা ভেঙে দিলে, পরে সেই রোজা কাজা আদায় করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবে না। (দেখুন: সুরা বাকারা: ১৮৫, সুনানে তিরমিজি: ৭১৫)

কাজা আদায়ের নিয়ম
সাধারণভাবে একজন মুসলিম যেভাবে রমজানের রোজা রাখেন, কাজা রোজাও ঠিক একইভাবে আদায় করতে হবে। একাধিক রোজা কাজা হয়ে থাকলে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ধারাবাহিকভাবে কাজা আদায় করা উত্তম। 

নাবালেগ যদি রোজা রেখে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় রোজা ভেঙে ফেলে, তাহলে তার কাজা বা কাফফারা কোনোটিই প্রয়োজন হবে না। যদি তারা বড়দের সঙ্গে কাজা রোজা রাখতে শুরু করে এবং তা আবারও ভেঙে ফেলে, তারও কাজা লাগবে না। (আল হিদায়া)।

কাফফারার বিধান
শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার বা সহবাসের মাধ্যমে রমজানের রোজা ভেঙে ফেললে তার কাজা ও কাফফারা আদায় করতে হবে। পানাহার ও সহবাস ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে ইচ্ছাকৃত ভাঙলেও কাফফারা দিতে হবে না, তবে কাজা করতে হবে। (মাবসুত সারাখসি: ৩/৭২)

কাফফারার আদায়ের নিয়ম
রোজার কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে টানা ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। টানা ৬০টি রোজা রাখার মাঝখানে যদি এক দিনও বাদ যায়, তাহলে পুনরায় শুরু থেকে গণনা আরম্ভ করতে হবে, আগেরগুলো বাদ হয়ে যাবে। (মাবসুতে সারাখসি: ৩/৮২)

অথবা ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হবে। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিকবার একই রমজানের রোজা ভাঙার কারণে এক কাফফারাই যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ ভেঙে ফেলা সব রোজার জন্য ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়াবে, অথবা প্রতি মিসকিনকে এক ফিতরা পরিমাণ সম্পদ সদকার মাধ্যমেও কাফফারা আদায় করা যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/১০১, রদ্দুল মুখতার: ২/৪১৩)

৬০ মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রত্যেককে এক ফিতরা পরিমাণ গম বা তার সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হলো, ওই টাকা দ্বারা মিসকিনকে খানা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একজন গরিবকে প্রতিদিন এক ফিতরা পরিমাণ করে ৬০ দিন দিলেও আদায় হবে। ৬০ দিনের ফিতরা পরিমাণ একত্রে বা একদিনে দিলে আদায় হবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৫১৩, রদ্দুল মুখতার: ৩/৪৭৮)

রোজা রেখে কাফফারা আদায় করার ক্ষেত্রে বছরের যে পাঁচদিন রোজা রাখা হারাম, সেই দিনগুলোতে রোজা রাখা যাবে না। আর স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে যদি কাফফারা আদায় করার সময় হায়েজ শুরু হয়, তবে সেসময়ের মধ্যে রোজা না রেখে পবিত্র হওয়ামাত্রই রোজা রাখা আরম্ভ করতে হবে।

ফিদিয়া, কাফফারা ও সদকাতুল ফিতর তাদেরকেই দেওয়া যাবে, যাদেরকে জাকাত প্রদান করা যায়। যথা ‘ফকির, মিসকিন, নওমুসলিম, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত প্রভৃতি।’ (সুরা-৯ তওবা: ৬০)

রোজার কাজা ও কাফফারা যেভাবে আদায় করবেন
একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা রাখা হলো কাজা, আর কাফফারার মানে- লাগাতার ৬০টি রোজা রাখা অথবা ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ানো। শরিয়তসম্মত ওজরে রাজা না রাখা ও ভেঙে দিলে কাজা বা ফিদিয়া দিতে হবে। আর বিনা ওজরে রোজা ভেঙে দিলে, কাজা ও কাফফারা দুটোই আদায় করতে হবে। 

তবে কাফফারা আদায় করলেও ফরজ রোজার ঘাটতি সারাজীবন থেকে যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভাঙে, তার ওই রোজার বিপরীতে সারা জীবনের রোজাও রমজানের একটি রোজার সমমর্যাদা ও স্থলাভিষিক্ত হবে না। ’(সুনানে তিরমিজি: ৭২৩) 

শরিয়তসম্মত ওজর থাকলে রোজা ছেড়ে দেওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘...আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)

কাজা রোজার বিধান 
রোজাদার যদি মুসাফির, রোগাক্রান্ত, গর্ভবতী ও দুগ্ধ দানকারী হন, সেক্ষেত্রে রোজা কাজা করার বিধান আছে। এছাড়াও বার্ধক্য, প্রাণনাশের আশঙ্কা, কেউ জোর-জবরদস্তি করে রোজা ভঙ্গ করতে বাধ্য করলে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাগল হয়ে গেলে, মহিলাদের পিরিয়ড ও প্রসব পরবর্তী রক্তস্রাব দেখা দিলে, সাপ-বিচ্ছুসহ বিষধর কোনো প্রাণী দংশন করলে কিংবা জিহাদরত অবস্থাসহ যেকোনো শরিয়তসম্মত কারণে রোজা না রাখলে বা ভেঙে দিলে, পরে সেই রোজা কাজা আদায় করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবে না। (দেখুন: সুরা বাকারা: ১৮৫, সুনানে তিরমিজি: ৭১৫)

কাজা আদায়ের নিয়ম
সাধারণভাবে একজন মুসলিম যেভাবে রমজানের রোজা রাখেন, কাজা রোজাও ঠিক একইভাবে আদায় করতে হবে। একাধিক রোজা কাজা হয়ে থাকলে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ধারাবাহিকভাবে কাজা আদায় করা উত্তম। 

নাবালেগ যদি রোজা রেখে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় রোজা ভেঙে ফেলে, তাহলে তার কাজা বা কাফফারা কোনোটিই প্রয়োজন হবে না। যদি তারা বড়দের সঙ্গে কাজা রোজা রাখতে শুরু করে এবং তা আবারও ভেঙে ফেলে, তারও কাজা লাগবে না। (আল হিদায়া)।

রোজার কাফফারার বিধান
শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার বা সহবাসের মাধ্যমে রমজানের রোজা ভেঙে ফেললে তার কাজা ও কাফফারা আদায় করতে হবে। পানাহার ও সহবাস ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে ইচ্ছাকৃত ভাঙলেও কাফফারা দিতে হবে না, তবে কাজা করতে হবে। (মাবসুত সারাখসি: ৩/৭২)

রোজার কাফফারার আদায়ের নিয়ম
রোজার কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে টানা ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। টানা ৬০টি রোজা রাখার মাঝখানে যদি এক দিনও বাদ যায়, তাহলে পুনরায় শুরু থেকে গণনা আরম্ভ করতে হবে, আগেরগুলো বাদ হয়ে যাবে। (মাবসুতে সারাখসি: ৩/৮২)

অথবা ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হবে। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিকবার একই রমজানের রোজা ভাঙার কারণে এক কাফফারাই যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ ভেঙে ফেলা সব রোজার জন্য ৬০ জন মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়াবে, অথবা প্রতি মিসকিনকে এক ফিতরা পরিমাণ সম্পদ সদকার মাধ্যমেও কাফফারা আদায় করা যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/১০১, রদ্দুল মুখতার: ২/৪১৩)

৬০ মিসকিনকে দুবেলা খানা খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রত্যেককে এক ফিতরা পরিমাণ গম বা তার সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া যেতে পারে। তবে শর্ত হলো, ওই টাকা দ্বারা মিসকিনকে খানা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একজন গরিবকে প্রতিদিন এক ফিতরা পরিমাণ করে ৬০ দিন দিলেও আদায় হবে। ৬০ দিনের ফিতরা পরিমাণ একত্রে বা একদিনে দিলে আদায় হবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৫১৩, রদ্দুল মুখতার: ৩/৪৭৮)

রোজা রেখে কাফফারা আদায় করার ক্ষেত্রে বছরের যে পাঁচদিন রোজা রাখা হারাম, সেই দিনগুলোতে রোজা রাখা যাবে না। আর স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে যদি কাফফারা আদায় করার সময় হায়েজ শুরু হয়, তবে সেসময়ের মধ্যে রোজা না রেখে পবিত্র হওয়ামাত্রই রোজা রাখা আরম্ভ করতে হবে।

ফিদিয়া, কাফফারা ও সদকাতুল ফিতর তাদেরকেই দেওয়া যাবে, যাদেরকে জাকাত প্রদান করা যায়। যথা ‘ফকির, মিসকিন, নওমুসলিম, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত প্রভৃতি।’ (সুরা-৯ তওবা: ৬০)