চট্টগ্রাম বন্দরে রফতানি বেড়েছে ৫ শতাংশ

চট্টগ্রাম বন্দরে রফতানি বেড়েছে ৫ শতাংশ

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) রফতানি হয়েছে চার হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য। যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ বেশি। এছাড়াও বেড়েছে কার্গো হ্যান্ডলিং এবং রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৭তম বর্ষপূর্তির মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

তিনি বলেন, বতর্মানে কনটেইনার জাহাজ বহির্নোঙরে আসার এক থেকে দু’দিনের মধ্যে জেটিতে ভিড়ছে, ক্ষেত্রবিশেষে অন-অ্যারাইভেল জেটিতে ভিড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কন্টেনার হ্যান্ডলিং ২০২২-২০২৩ এর একই সময়ের তুলনায় আট দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে তিন দশমিক দুই মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে মর্মে আশা করা যাচ্ছে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জেনারেল কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে নয় কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ বেশি। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে তিন হাজার একটি।

তিনি বলেন, বিগত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪৩ হাজার বর্গমিটার কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এ কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের ফলে অতিরিক্ত সাত হাজার টিইইউএস কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আরো তিনটি নতুন কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আগত রাসায়নিক পদার্থসমূহকে নিরাপদে সংরক্ষণ ও ছাড়করণের লক্ষ্যে দ্বিতল বিশিষ্ট চার হাজার ২৭৫ বর্গমিটার আয়তনের একটি কেমিক্যাল শেড নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা রক্ষার্থে নদীর উভয় পাড়ে দুই হাজার ৮৫০ মিটার ব্যাংক প্রটেকশন কাজ সম্পাদন করা হয়েছে।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর প্রসঙ্গে রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের নবনির্মিত চ্যানেলটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক গ্রহণ করার পর গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন চ্যানেলে বয়া এবং নেভিগেশনাল ট্রানজিট স্থাপন করে অদ্যাবধি ১৩৫টি জাহাজ নিরাপদে বার্থিং-আনবার্থিং করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রাগৈতিহাসিক বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রপাড়ির কথা জানা যায়। পরবর্তীতে আরব ও ইয়েমেনী বণিকরা এবং তারপর ক্রমান্বয়ে চাইনিজ, পর্তুগিজ, ডাচ ও ব্রিটিশরাও এই বন্দর ব্যবহার করেন।

তৎকালীন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়া সরকার ১৮৮৭ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করে, যা ২৫ এপ্রিল ১৮৮৮ সালে কার্যকর হয়। বস্তুত তখন থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তাই প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস হিসেবে পালন করা হয়।