বাকৃবিতে বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাকৃবিতে বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিশালাকার ও দীর্ঘজীবী গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের একটি অত্যাধুনিক ল্যাব তৈরির উদ্যেশ্যে লাল ফুলে আচ্ছাদিত একটি বয়স্ক কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে।

এরই প্রক্ষিতে উন্নয়নের নামে অযাচিতভাবে বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদে ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েস।

শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০ টায় ভেটেরিনারি অনুষদীয় ভবনের-৩ সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাকৃবি শাখা গ্রিন ভয়েসের সদস্যসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে উত্থাপিত দাবি ৫ টি হলো অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষনিধন বন্ধ করতে হবে ও সবুজায়ন নীতি গ্রহন করতে হবে। যে পরিমাণ বৃক্ষনিধন করা হয়েছে তার ১০ গুণ বৃক্ষরোপন করতে হবে। পরবর্তীতে একটি গাছ কাটার ৩ মাস আগে নতুন করে ১০টি গাছ লাগাতে হবে ও এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় গাছের ডালপালা কাটার নামে গাছকে পঙ্গু করা বন্ধ করতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কোথাও গাছ কাটা একান্তই প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ পরিবেশবাদী ও ছাত্রসংগঠন গুলোর মতামতের ভিত্তিতে নতুন বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা ও সেটির বাস্তবায়নের রূপরেখা নোটিশের মাধ্যমে প্রদান সাপেক্ষে গাছ কাটতে হবে। ভবিষ্যতে আর কোনো বৃক্ষনিধন না করে বিকল্প ব্যবস্থায় রাস্তা, বৈদ্যুতিক লাইন ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে, সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে গাছ কাটার উৎসব। উন্নয়ন প্রয়োজন কিন্তু তা গাছ কেটে কেন? গাছ না কেটে বিকল্প কোনো চিন্তা করা কী সম্ভব নয়? যে কৃষ্ণচূড়া গাছটির ডালপালা কেটে দেওয়া হলো সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সৌন্দর্য্যবর্ধনকারী গাছ ছিল। গাছটি কেটে ফেলার উদ্দেশ্যেই গাছের ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী এ গাছ কাটার বিষয়ে প্রতিবাদ করছেন।

বক্তারা আরও বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৩টি বড় বড় গাছ কাটা হয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী গাছ লাগানোর কোনো নজির পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের কাজ কী শুধু প্রায়োগিক শিক্ষা দেওয়া? পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাদের কী কেনো কাজই করার নেই? গাছ কেটে এ উন্নয়ন আমরা চাই না। আর গাছ যদি কাটতেই হয়, তাহলে তার ১০ গুণ গাছ আগে লাগাতে হবে। তারপর গাছ কাটতে হবে। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার। কারণ পরিবেশের বিরূপ প্রভাব সবাইকেই মোকাবিলা করতে হবে। এখন দাবদাহ চলছে। ধীরে ধীরে অবস্থা আরও খারাপ হবে। যেখানে বনায়নের দিকে মন দেওয়া প্রয়োজন সেখানে আমরা গাছ ধ্বংসে উঠে পড়ে লেগেছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের যে সচেতনতা রয়েছে সেটি একটি ভালো বিষয়। তবে গ্রিন ভয়েসের কেউ আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গাছ লাগানো হচ্ছে না বিষয়টি এমন না। একটি গাছ কাটা হলে সেটি সকলের চোখ পড়ে। কিন্তু যখন একটি গাছ লাগানো হয় তখন কোনো আয়োজন করে সেটি জানানো হয় না। এ কারণেই শিক্ষার্থীদের মনে এরকম চিন্তা চলে এসেছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু গাছ কাটা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক গাছ আছে এবং প্রয়োজনের বেশি গাছ আছে।