ঝিনাইদহে ধর্ষণ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবন

ঝিনাইদহে ধর্ষণ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহে ধর্ষণ মামলায় সদর উপজেলা হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫ লাখ টাকা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহের নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ)  মো. মিজানুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় খন্দকার ফারুকুজ্জামান এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং নরহরিদ্রা গ্রামের খোন্দকার আমিরুজ্জামানের ছেলে। তিনি বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজ পাড়ায় বসবাস করেন। 

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলে চেয়ারম্যান ফরিদের নরহরিন্দ্র গ্রামের বাড়িতে একটি ঘটনার বিচার চাইতে যায় ভুক্তভোগী নারী। সেসময় ফাঁকা বাড়িতে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে চেয়ারম্যান ওই নারীকে ধর্ষণ করে। পরদিন ভুক্তভোগী নারী সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল ওই নারী ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। চেয়ারম্যান ও তার গাড়ি চালককে আসামি করে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার নারী। ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে ওই নারীকে বিয়ে করে আবার একই টেবিলে বসে তালাকও দেন ফরিদ। 

এদিকে ধর্ষণ মামলার পর ফারুকুজ্জামান ফরিদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান। ঝিনাইদহের আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য ঢাকায় পাঠায়। ডিএনএ টেষ্টে ফরিদ ফেঁসে যায়। এ কারণে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেন।

বিজ্ঞ আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৯(১) ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিামনা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এই মামলায় ফরিদের গাড়িচালক হুদা বাকড়ী গ্রামের ইউনুস মুন্সির ছেলে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে। রাষ্ট্র পক্ষে অ্যাড. বজলুর রহমান ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট নেকবার আলী মামলাটি পরিচালনা করেন