নির্বাচনে সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার

নির্বাচনে সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার

ছবি:সংগৃহীত

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন প্রার্থীর সমর্থকরা সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য মাঠে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর আছে। 

বুধবার সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিটি উপজেলাকে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কেউ কোন ধরনের সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, গতবার উপজেলা নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১২ জনের বেশি সদস্যকে দেওয়া যায়নি। এবার সাধারণ ভোট কেন্দ্রগুলোতে ১৭ জন রয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আছেন ১৯ জন। এর বাইরে মাঠে পুলিশ ও বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে জুডিসিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য। যারা দুষ্কৃতিকারী, সংখ্যায় আমরা তাদের চেয়ে বেশি আছি। সুতরাং, ভোটে সহিংসতার চেষ্টা করলে লাভ হবে না।

উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে গড়ে ৩৭ শতাংশ ভোটার এসেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থীরা ভোটার নিয়ে আসেন। উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী কম, সেটা হয় না। এবার সকাল থেকে আবহাওয়া প্রতিকূল ছিল, তাই ভোটর একটু কম ছিল। এখন ধীরে ধীরে বাড়বে। 

বুধবার রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভাগীয় কমিশনার সকালে পবার নওহাটা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ছাড়াও বায়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও নওহাটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ভোটার ও এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলেন। ভোট গণনা শেষে কেন্দ্র থেকে ফলাফল নিয়েই বাড়ি ফেরার জন্য প্রার্থীর এজেন্টদের পরামর্শ দেন তিনি।

এসময় বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার, পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন মিয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে তৃতীয় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই সকাল ৮টা থেকে পবা ও মোহনপুর উপজেলায় ভোট কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এসময় তিনি ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানে আশ্বস্ত করেন।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর উপজেলায় নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আছেন ১২ জন। এছাড়া ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ১২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী আছেন।

তিনি আরও বলেন, পবা উপজেলার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৮৪টি, ভোটকক্ষের সংখ্যা ৬২৬টি, মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৮ জন। তার মধ্যে এই উপজেলায় পুরুষ ভোটার আছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯০১ জন ও নারী আছেন এক লাখ ২৯ হাজার ৯৩৪ জন এবং হিজড়া ভোটার আছেন তিনজন। এছাড়াও মোহনপুর উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৫টি, মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৪৬টি এবং ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৭২ হাজার ৭০৪ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা আছে ৭২ হাজার ৮৩৯ জন।