কানাডাকে হেসেখেলে উড়িয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র

কানাডাকে হেসেখেলে উড়িয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত

আনুষ্ঠানিক কোনো জৌলুস ছাড়াই শুরু হয়েছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তবে দিনশেষে মাঠের খেলাই যে আসল, সেটাই প্রমাণ করলো প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চ মাতাতে আসা আইসিসির দুই সহযোগী দেশ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। একঝাঁক রেকর্ড আর চার-ছক্কার পসরা মেলে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডাকে হারাল যুক্তরাষ্ট্র।

রোববার (২ জুন) ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে কানাডা। জবাবে ১৪ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিক দল।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন স্টিভেন টেইলর। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই টেইলরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কলিম সানা। কানাডার জোরালো আবেদনে সাড়া দেন ফিল্ড আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ। এরপর রিভিউ নিলেও তাতে লাভ হয়নি স্বাগতিকদের।

এরপর মোনাঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আন্দ্রেস গাউস। তবে মোনাঙ্কও বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। পাওয়ার প্লে’র পরই প্যাভিলিয়নে ফেরেন যুক্তরাষ্ট্রের এই দলপতি। দলীয় ৪২ রানে হেলিগারের শিকার হয়ে ফেরার আগে ২ বাউন্ডারিতে সাজান ১৬ রানের ইনিংস।

এরপর কানাডার ওপর রীতিমতো তান্ডব শুরু করেন আন্দ্রিস গোস ও অ্যারন জনস। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে গড়েন ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। তবে ইনিংসের ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গোস। ফেরার আগে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় বিশ্বমঞ্চে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নেন এই ব্যাটার।

শেষ দিকে জয়ের জন্য ৩ ওভারে ১৪ রান দরকার ছিল স্বাগতিকদের। তবে সেটি দীর্ঘায়িত হতে দেননি জনস। ইনিংসের ১৮তম ওভারের প্রথম চার বলে দুটি ছক্কা আর এক চারে ১৪ বল বাকি থাকতেই দলের জন্য নিশ্চিত করেন এই ব্যাটার। দলের ৭ উইকেটে জয়ের দিনে শেষ পর্যন্ত ১০ ছক্কা ও ৪ চারের মারে ৪০ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন জোন্স।

এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় কানাডা। দুই ওপেনার অ্যারন জনসন ও নাভনিত ধালিয়ালের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ইনিংসের পাঁচ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৪৩ রান জড়ো করে তারা। তবে পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে উইকেটের দেখা পায় স্বাগতিক দল। হারমীতের বলে নিতিশ কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৫ বাউন্ডারিতে ১৬ বলে ২৩ রানে ফেরেন জনসন

এরপর ব্যাটিংয়ে আসা প্রাগাত সিংও বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি। ৭ বলে মাত্র ৫ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।

হঠাৎ জোড়া উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে কানাডা। তবে ধালিয়ালের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে চাপ সামলে নেন নিকোলাস কিরটোন। তাদের ৩৭ বলে ৬২ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন বুনেছিল কানাডা।

এরপর স্বাগতিকদের ত্রাতা হন নিউজিল্যান্ড ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমানো কোরি অ্যান্ডারসন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই ওপেনার ধালিয়ালকে সাজঘরে ফেরান তিনি। লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ৬১ রান।

এরপর কিছুটা কমে কানাডার রানের গতি। অল্প সময়ের ব্যবধানে আলি খানের বলে অ্যান্ডারসনের মুঠোবন্দি হয়ে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রান করে কিরটোন ফিরলে ফের চাপে পড়ে কানাডা।

শেষদিকে শ্রেয়াস মোভার অপরাজিত ৩২ এবং দিলপ্রীত বাজওয়ার ৫ বলে ১১ রানের ক্যামিওতে ১৯৪ রানে থামে কানাডার ইনিংস।

স্বাগতিকদের হয়ে হারমীত সিং, কোরি অ্যান্ডারসন ও আলি খান একটি করে উইকেট নেন।