কুমিল্লায় ছাদ থেকে ফেলে গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগ

কুমিল্লায় ছাদ থেকে ফেলে গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগ

প্রতিকী ছবি

কুমিল্লার লাকসামে তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে এক কিশোরী গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাকসাম পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাহাপাড়ায় ডা. চন্দ্র মোহন সাহার তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে পরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোরী বীপা সরকার (১৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের ভাগি গ্রামের মৃত গৃদিধন সরকারের মেয়ে। এ বিষয়ে লাকসাম থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ পোষণ করছেন নিহতের স্বজনরা।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে গত ১৪/১৫ দিন আগে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য চঞ্চলা সরকারের মাধ্যমে বিপা সরকার ও তার মা মিলন সরকারকে লাকসামে ডা. চন্দ্র মোহন সাহার বাসায় গৃহকর্মীর কাজে নিয়োগ করা হয়। মা-মেয়ে দুজনকে একসাথে রাখার কথা থাকলেও কয়েকদিন পরে মেয়ে বীপা সরকারকে লাকসামে ডা. চন্দ্র মোহন সাহার বাসায় রেখে মা মিলন সরকারকে ডা. চন্দ্র মোহন সাহার ছোট ছেলে পাপন সাহার চট্টগ্রামস্থ বাসায় কাজের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়।

নিহতের বোন সীমা সরকার জানান, মাকে চট্টগ্রামে পাঠানোর পর থেকেই ওই বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার মা মিলন সরকার এবং বোন সীমা সরকারকে মোবাইল ফোনে অনুরোধ জানান বীপা সরকার।

নিহতের মা মিলন সরকার কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় গৃহকর্তা ডা. চন্দ্র মোহন সাহা ও গৃহকত্রী সাধনা সাহা, বাসার কাজের লোক নিহতের দুঃসম্পর্কের মামী আশালতা ও নার্সিং সহকারী মো. আনাস জড়িত বলে দাবি করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত শাস্তির অনুরোধ জানান। তিনি ধারণা করছেন, বীপা সরকারকে ধর্ষণ করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থান হলেও দুর্ঘটনার পর ওই কিশোরীকে চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতাল কিংবা ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়নি। এতে সন্দেহ আরো বেড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

ভাগী ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য চঞ্চলা সরকার বীপা সরকারকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী ও কাজের লোক আশালতা এবং আনাসের শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, এত কাছে হাসপাতাল থাকলেও বিপাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। এটা খুবই সন্দেহজনক।

তবে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা থানায় এসেছেন। তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাকসাম থানার ওসি সাহাবুদ্দিন খান জানান, এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।