সূত্রাপুরের অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

সূত্রাপুরের অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

ফাইল ছবি

রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামি মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া আসামি ইফতেখার বেগ ঝলককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও খালাস পাওয়া অপর আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

মঙ্গলবার (৪ জুন) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর তিনজন হলেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

রায়ে বলা হয়েছে, মুন্নাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। অন্যথায় পুলিশকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

এর আগে ২০১৮ সালের মে মাসে রাজধানীর সূত্রাপুরের বাসিন্দা আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে খালাস এবং অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনও আদেশ দেননি হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি হলো— মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিন। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না, ইফতেখার বেগ ঝলককে খালাস দেওয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি মাহবুব আলম ও বিপ্লব চন্দ্র দাস পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনও আদেশ দেননি আদালত। বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

পরে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা। একইসঙ্গে খালাসপ্রাপ্তদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

উল্লেখ্য, মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসীরা অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে ও আশিকুর রহমান খান অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আশিকুর রহমান খান অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে। এরপর তারা তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই ভাই বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান কেয়া বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে মাহবুব আলম ও বিপ্লব পলাতক। বাকিরা জেলহাজতে আছেন।

পরে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসি ও চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে আসামিরা।