জমজমাট যশোরের পশুহাট: মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা

জমজমাট যশোরের পশুহাট: মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা

ছবি: প্রতিনিধি

তরিকুল ইসলাম তারেক: একদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এই ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে যশোরের বিভিন্ন পশুর হাট। দেশি গরু, খামারিদের পালিত গরু এবং ছাগলে এসব হাটগুলো জমতে শুরু করেছে। এ বছর কোরবানি উপলক্ষে জেলায় মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৮'শ ৫১টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এই পরিমাণ গরু-ছাগল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকবে বলে প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে। তবে হাটে ওঠা গরু ছাগলের সমারোহে এবং বেচা কেনার শুরুর কারণে জমতে শুরু করেছে ক্রেতা-বিক্রেতা ও হাট মালিকরা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

যশোরের গরুর হাটে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জাতের ও আকারের গরুর সমাগম শুরু হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে পশু হাট। এদিকে হাটগুলো নিরাপত্তায় ইজারাদারদের নিজস্ব লোকজন প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। এবারের ঈদের হাটগুলোতে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা থাকলেও বড় গরুর চাহিদা তুলনামূলক কম বলে জানান খামারিরা।

সরেজমিনে কুরবানির একাধিক পশুর হাটে দেখা যায়, বিকেল হতে না হতেই কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হচ্ছে। বড় গরুগুলো হাটে বিশেষভাবে রাখা হয়েছে। সেলাইন এবং ঠান্ডা পানি থাকছে গরু ব্যবসায়ীদের সাথে। এদিকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত পশুহাটে বেচা-কেনা চলবে বলে হাটগুলোতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা করেছে। হাটগুলোতে দেশি, শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরুর পাশাপাশি বিভিন্ন আকারের ছাগলও বিক্রি হচ্ছে।

গরুর খামারি মামুন হোসেন জানান, হাটে প্রচুর গরু উঠলেও বিক্রি কম। ৭ হাজার টাকা লোকসানে গরু বিক্রি করতে হয়েছে। কয়েকদিন আগে যে গরু দাম ১ লাখ ৮৭ হাজার দাম হচ্ছিলো সে গরু বিক্রি করতে হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজারের কমে। তবে বিক্রি হচ্ছে মাঝারি সাইজের গরুগুলো। বর্তমানে গো- খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবং গরু লালন পালন করতে ব্যয় বেশি হচ্ছে বলে খামারিদের লাভের পরিমাণ কম হবে।

ক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, এখনো পছন্দমত গরু পাননি তিনি। তার মতে বিক্রেতারা গরুর দাম একটু বেশি বলছে। তবে বিক্রেতাদের দাবি গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় পশুপালনে খরচ বেশি। ক্রেতা আব্দুর রহিম জানান, কোরবানি দেওয়ার জন্য গরু দেখতে আসছি। গরু দেখে পছন্দ হলেও কিনবো। তবে দামের সাথে মিলছে না। এ হাটে না হলে পরের হাটে কিনতে হবে।

গরু ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ জানান,খাজুরার পশু হাট হয় শুক্রবার ও রোববার। চৌগাছা উপজেলার এ হাটে এবার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশি পশু আসছে। ফলে হাটে গরুর আমদানিও যথেষ্ট। এ হাটে গত কয়েক হাটের তুলনায় বিক্রিও অনেক বেশি। মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। গরু ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছেন তিনি। ঈদের যে কোনো হাটে আবার বিক্রি করতে হবে। তবে এবার বড় গরুর চাহিদা কম।

গরু ব্যবসায়ী বাদল জানান, হাটে বেচা- কেনা মোটামুটি শুরু হয়েছে। আমাদের টার্গেট ঈদের আগে এক হাট। এদিনের হাটে ৩টি গরু এনেছি। যেভাবে ক্রেতাদের ভিড় জমেছে তাতে আসা করি বেচা- কেনা বাড়বে। হাট মালিক পক্ষের ইসমাইল হোসেন জানান, কোরবানির পশু শেষ হাটেই বেশি উঠবে। আবার সে হাটে বেচা-কেনাও হবে। তবে ইতোমধ্যে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। শহরে বসবাসকারী ক্রেতারা সাধারণত ঈদের আগের হাটে কোরবানির পশু ক্রয় করে থাকেন।

যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, যশোর জেলায় কোরবানি উপলক্ষে যে পশু প্রস্তুত রয়েছে তা চাহিদার তুলতায় অনেক বেশি। এ বছর মোট পশু প্রস্তু করা আছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮'শ ৫১টি। এর মধ্যে চাহিদা আছে ৯৬ হাজার ৭'শ ১৮ পশু। উদ্বৃত্ত থাকবে ৩ হাজার ১'শ৩৩ টি পশু। তিনি আরও জানান, এবার কোরবানির পশু জেলার চাহিদা মেটানোর পরও অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।