স্লোভেনিয়ার সাথে ডেনমার্কের ড্র

স্লোভেনিয়ার সাথে ডেনমার্কের ড্র

ছবি: সংগৃহীত

ঠিক তিন বছর আগে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের গোলে স্লোভেনিয়ার সাথে ১-১ গোলের ড্র দিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপ শুরু করেছে ডেনমার্ক।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডার স্টুটগার্ট স্টেডিয়ামে ১৭ মিনিটে দারুন এক গোলে ড্যানিশ সমর্থকদের আনন্দে ভাসান। যদিও এরিক জানজার ৭৭ মিনিটের ডিফ্লেকটেড শটে স্লোভেনিয়া ম্যাচে সমতা ফেরায়। ২০০০ সালের পর ইউরোতে এটাই স্লোভেনিয়ার প্রথম পয়েন্ট অর্জন।

ম্যাচ শেষে এরিকসেন বলেছেন, ‘আমি মনে করি এবারের ইউরোতে আমার গল্পটা গতবারের থেকে একেবারে ভিন্ন হবে। ইউরোতে আমি কখনো কোন গোল পাইনি, এই বিষয়টা আমার মাথায় আছে। কিন্তু ফুটবল বাদে  অন্য কিছুই আমার মাথায় কখনো থাকেনা। আজ যদি তিন পয়েন্ট পেতাম তবে গল্পটা ভিন্ন হতো।  আরো বেশী খুশী হতাম।’

আগামী বৃহস্পতিবার  ফ্রাঙ্কফুর্টে গ্রুপ-সি’র দ্বিতীয় ম্যাচে ডেনমার্ক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। স্লোভেনিয়ার কোচ মাটিজা কেক বলেছেন, ‘গোল হজমের পর আমরা কিছুটা নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম বলে আমি মনে করি। কিন্তু টুর্নামেন্টর অপর ম্যাচগুলোর জন্য এটা একটা শিক্ষাও হলো। খেলোয়াড়রা দেখেছে এটা একটা দুর্বোধ্য  পর্বত নয়।’

করোনা মহামারিতে এক বছর দেরীতে শুরু হওয়া গতবারের আসরে ডেনমার্ক সেমিফাইনালে খেলেছিল। শেষ চারে তাদের ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে হতাশ হতে হয়। বিশেষ করে কোপেনহেগেনে প্রথম ম্যাচেই মাঠের মধ্যে এরিকসেনের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার পরও দল যে এতদুর গিয়েছিল তাতে পুরো ফুটবল বিশ্বের প্রশংসাই কুড়িয়েছিল ডেনমার্ক। মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখা এরিকসেন যে আবারো ফুটবলে ফিরতে পারবেন তা ছিল অনেকটাই বিস্ময়। নয় মাস পর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের মাধ্যমে আবারো আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে আসেন এরিকসেন।  

২০২৩ ইউরোর প্রথম ম্যাচের আগে এরিকসেন বলেছেন ঐ দু:সহ ঘটনা এখন আর প্রতিদিন তার মনে আসে না। তার পরিবর্তে জার্মানীতে কিভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সেটাই এখন তার মূল লক্ষ্য।

বাছাইপর্বে ১০ ম্যাচ শেষে স্লোভেনিয়া ও ডেনমার্কের পয়েন্ট ছিল সমান ২২।  হেড-টু-হেড রেকর্ডে ডেনমার্ক গ্রুপ-এইচ’র শীর্ষ দল হিসেবে চূড়ান্ত পর্বে আসে। স্লোভেনিয়ান তারকা স্ট্রাইকার বেঞ্জামিন সেসকো ড্যানিশ গোলরক্ষক কাসপার সিমিয়েচেলকে দুর পাল্লার শটে প্রায় পরাস্ত করেই ফেলেছিলেন। পরের মিনিটেই এরিকসেনের গোলে এগিয়ে যায় ড্যানিশরা। জোনাস উইন্ডের দ্রুত একটি থ্রো থেকে এরিকসেন লো শটে বল জালে জড়ান। সেসকোকে ড্যানিশ রক্ষনভাগ কড়া মার্কিংয়ে রেখেছিল। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি আনড্রাজ স্পোরার। সেসকো একটি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রায় নিজের জালে জড়িয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাকের সতকর্তায় কোন অঘটন ঘটেনি।  উজ্জীবিত উইন্ডের দৃঢ়তায় বিরতির আগ পর্যন্ত ডেনমার্ক অনেকটাই দাপট দেখিয়েছে। ডেনমার্কের একটি সেট-পিস থেকে স্লোভেনিয়ার ডিফেন্ডার জাকা বিওল আত্মঘাতি গোলের লজ্জা থেকে রেহাই পেয়েছেন।  

রাসমাস হোলান্ডকে ব্যবধান দ্বিগুন করতে দেননি ওবলাক। ইউনাইটেডের এই ফরোয়ার্ডকে অনেকটা একাই প্রতিহত করেছেন ওবলাক। সেসকোর দুর্দান্ত একটি শট পোস্টের অল্প বাইরে দিয়ে চলে যায়। পরের মুহূর্তেই সমতায় ফিরে স্লোভেনিয়া। কর্ণার ঠিকমত ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ডেনমার্ক, জাজার হাফ-ভলি পেনাল্টি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মর্টিন হালমান্ডের ডিফ্লেক্ট হয়ে শিমিচেলকে পরাস্ত করে।