টেকনাফে ভারি বর্ষণে ৫০ গ্রাম প্লাবিত

টেকনাফে ভারি বর্ষণে ৫০ গ্রাম প্লাবিত

সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে ভারী বর্ষণে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কম হলেও ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার পর থেকে কক্সবাজারে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হান্নান  জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে আজ বুধবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

এদিকে টেকনাফে শুধুমাত্র ৬ ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডের তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের আট গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২ গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার সাত গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছয় গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের সাত গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। তারা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, তার ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের ৪ হাজার বেশি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।

এসব গ্রামগুলো হলো, জালিয়াপাড়া, সাইটপাড়া, ফুলের ডেইল, আলী আকবর পাড়া, রঙ্গিখালী লামার পাড়া, আলীখালি, চৌধুরী পাড়া, পূর্ব পানখালী, মৌলভীবাজার লামার পাড়া, ওয়াব্রাং, সুলিশপাড়া, পূর্ব সিকদার পাড়া। এসব গ্রামের চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, টেকনাফ পৌরসভার কলেজপাড়া, শীলবুনিয়া পাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া প্লাবিত রয়েছে। তিনি আরও জানান, এই সাত গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দী। পানিতে ডুবে আছে টেকনাফ কলেজসহ অনেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানও। পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু ঘরবাড়িসহ চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া এসব এলাকায় মাছের ঘেরসহ লবণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, সদরের ছয় গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এগুলো হলো, মহেশখালীয়াপাড়া, তুলাতুলি, লেঙ্গুরবিল, খোনকারপাড়া, মাঠপাড়া ও রাজারছড়া।

হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানান, লম্বাবিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, রইক্ষ্যং গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাড়ে ৩০০ পরিবার সবচেয়ে বেশি প্লাবিত রয়েছে। এর মধ্যে উনচিপ্রাং এলাকার একটি রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বসতবাড়িতে ১ ফুট পানি উঠে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণে ফলে কিছু গ্রামে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি অতি ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্রে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে ভূমিধস হওয়ায় কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৯ জন নিহত হয়েছেন।