বর্ষাকালে হতে পারে সর্দিজ্বর ও কাশি, জেনে নিন সুস্থ থাকার উপায়

বর্ষাকালে হতে পারে সর্দিজ্বর ও কাশি, জেনে নিন সুস্থ থাকার উপায়

ছবি: সংগৃহীত

ঋতু বদলের পরিক্রমায় গ্রীষ্মের পর এসেছে বর্ষাকাল। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বর্ষার প্রকৃতিতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। বর্ষার এ সময়ে দেশের কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে মেঘলা আকাশ, আবার কোথাও কোথাও হচ্ছে ঝুম বৃষ্টি। যেখানে বৃষ্টির দেখা মিলছে না, সেখানে ভ্যাপসা গরম আর অল্পবিস্তর নিম্নমুখী তাপমাত্রা। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনের কারণে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন অসুখ–বিসুখ। সর্দিজ্বর, কাশি সাধারণত বর্ষার প্রধান রোগ।

ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে একটু খোঁজখবর নিলে দেখা যাবে পাশের প্রতিবেশী পরিবারের কেউ না কেউ জ্বর, কাশি বা সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব উপসর্গ দেখা যাওয়ার কারণ ভাইরাস সংক্রমণ। এখনকার বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। তাই সহজেই শরীরের ঘাম শুকাচ্ছে না। আর ঘাম জমে বুকে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। এতে দেখা দিচ্ছে সর্দিজ্বর বা সর্দিকাশি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘ঋতু পরিবর্তনের কারণে এই সময় ঠাণ্ডাজ্বর হয়ে থাকে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। এই সময় প্রয়োজন কিছু সাবধানতা। বৃষ্টির দিনে যদি একান্তই বাইরে যেতে হয় তবে ছাতা, রেইনকোট নিয়ে বের হতে হবে। যেখানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে, সেখানে পা দেওয়া যাবে না। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে ঘরে এসে গা মুছে ফেলতে হবে। তা না হলে জ্বর, কাশি, সর্দি হতে পারে। আবার যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের খুব বেশি বাইরে বের হয় উচিত না। এই সময় ব্যক্তি সাবধানতার পাশাপাশি বাইরে খাবার খাওয়া উচিত না। পাশাপাশি সুস্থ থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন’।

এবার আসুন জেনে নেই বর্ষাকালে সুস্থ থাকার কিছু উপায় সম্পর্কে-
১. প্রচুর তরল পান করুন।
২. এই সময় ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাবেন না। 
৩. ঠান্ডার সমস্যা দূর করতে গরম পানির ভাপ নিন।
৪. সর্দিজ্বর আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রাম নিন।
৫. হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে গার্গল করুন। 
৬. হালকা গরম পানিতে লেবু, মধু দিয়ে পান করুন। 
৭. এ ছাড়া আদা চা, মসলাযুক্ত চা পান করতে পারেন। 
৮. এই সময় উষ্ণ পোশাক পরিধান করুন।  
৯. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মৌসুমি ফল ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
১০. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী মনে করেন, এই সময় ১০১–এর বেশি জ্বর না হলে ব্যথার ওষুধ সেবন করা উচিত না। এ ছাড়া শিশু ও বয়স্কদের প্রতি অনেক বেশি যত্নবান হওয়ার দরকার। কারণ তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। যে কারণে তারা সহজেই রোগে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। এই সময় নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই বয়স্করা নিউমোনিয়া জ্বরের প্রতিষেধক নিয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। তা না হলে বয়স্করা মারাত্মকভাবে এই রোগে আক্রান্ত হবেন। সর্বোপরি বর্ষায় প্রয়োজন সচেতনতা।