ঈদের মাসেও এটিএম কার্ডে লেনদেনে ভাটা

ঈদের মাসেও এটিএম কার্ডে লেনদেনে ভাটা

ফাইল ছবি

ব্যাংক খাতের তারল্য সংকটের প্রভাব পড়েছে এটিএম কার্ড লেনদেনেও। ঈদের সময় এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও টাকা ছিল না অনেক ব্যাংকের বুথে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহক। এছাড়াও নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা, টাকা কেটে নিয়েও বের না হওয়া, কার্ড আটকে যাওয়াসহ নানা জটিলতায় পড়েন গ্রাহকরা। টাকা তুলতে না পেরে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে অনেককেই। গেল এপ্রিল মাসে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। সেই মাসে এটিএম কার্ড দিয়ে প্রায় ৮ শতাংশ লেনদেন কম হয়েছে। লেনদেন কম হয়েছে পয়েন্ট অব সেল (পস), কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম), ই-কমার্সেও। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এটিএম, পস, সিআরএম ও ই-কমার্সে ট্রানজেকশনে লেনদেন হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। যা মার্চে ছিল ৫২ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কম হয়েছে ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৯ শতাংশ কম। এছাড়াও এপ্রিলে ট্রানজেকশন হয়েছিল ৫ কোটি ৫ লাখ ৩২ হাজার ১০৯টি। আগের মাসে হয়েছিল ৫ কোটি ৩৮ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৫টি। লেনদেন কমেছে ৩২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৩৬টি।

প্রতিবেদন বলছে, এপ্রিলে এটিএম বুথে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯৮টি যা মার্চে ছিল ৩ কোটি ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫১৭টি। লেনদেন কম হয়েছে ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৬১৯টি। এপ্রিলে লেনকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা, মার্চে যা ছিল ৩২ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। লেনদেন কমেছে ৩ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। যা এটিএম বুথে মোট লেনদেনের প্রায় ১০ শতাংশ। তবে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে বেড়েছে বুথের সংখ্যা। মার্চে সারাদেশে এটিএম বুথ ছিল ১৩ হাজার ৪৮৫টি, এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫০৭টিতে।

এছাড়াও চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিভিন্ন দোকান, বিপনী বিতান, পস মেশিনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৬৮ লাখ ৮২ হাজার ১০২টি, লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ ৩ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস মার্চে লেনদেন সংখ্যা ছিল ৬৭ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪টি, লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ ৩ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে ট্রানজেকশন বেশি হলেও টাকার পরিমাণ কমেছে ৩১ কোটি। এছাড়াও এপ্রিলে লেনদেনে ভাটা পড়েছে ই-কমার্সেও। এপ্রিলে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। লেনদেন কম হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা।

এদিকে এপ্রিলে কমেছে সিআরএম এ লেনদেনও। অনেক ব্যাংকের শাখা ৫০ হাজার টাকার কম হলে সরাসরি জমা না নিয়ে সিআরএমে দিতে বলে। সিআরএমে টাকা জমা দিতে গিয়ে নেটওয়ার্কের ভোগান্তি, হালকা ছেড়া টাকা জটিলতাসহ বেশ কিছু ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাহকদেরকে। এতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে গ্রাহক। ঈদুল ফিতরের এই মাসে সিআরএমএ লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৫ হাজার ৩৬৫টি। টাকার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। তার আগের মাসে লেনদেনের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮১টি। টাকার পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ১৫২ কোটি। ট্রানজেকশন কমেছে ৪ লাখ ৬২ হাজার ৩১৬টি। লেনদেনকৃত টাকা কমেছে ৮২৭ কোটি টাকা।