আল আমিনের খোঁজে কান্না করছে পরিবার

আল আমিনের খোঁজে কান্না করছে পরিবার

ছবি:সংগৃহীত

সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানী রামপুরা এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন খিলগাঁও এলাকার তৈয়বুর রহমান আল আমিন (২৫)। সেখানে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর সাথে দেখা করেন। কিন্তু এ সময় রামপুরা পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির একটি টিম তাদের হেফাজতে নিলেও এখন পর্যন্ত খোঁজ মিলছে না। ফলে আল আমিনের পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

আল আমিন পরিবারের সাথে খিলগাঁও এলাকার সিপাহীবাগে থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার পাইকগাছায়৷ তার বাবা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে তার পরিবারের সদস্যরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এসে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছিলেন। পরে তাদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

এসময় আল আমিনের পরিবারের সদস্যরা জানান, বিজিএমই টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি ইন্টার্ন করে বাসায় ছিলেন আল আমিন৷ ঘটনার দিন রামপুরায় বেড়াতে যান৷ তার বন্ধুর সাথে দেখা করে গল্প করছিলেন। এসময় থানা পুলিশের সদস্যরা তাকে ও তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ওমরকে (২৭) আটক করে। পরে তাদের কাছ থেকে সিআইডির একটি টিম তাদের নিয়ে আসে। ওই সময় তার মা ও বাবা সিএনজি নিয়ে তাদের ফলো করেন এবং সিআইডি সদর দফতরের গেট পর্যন্ত আসেন। এরপর তাদের আর ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু বলা হয়েছিল, তাদের পরে দেখা করতে দেওয়া হবে। ৩২ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও তার কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না তারা।

আজও আল আলামিনের পরিবার সিআইডির গেটে গিয়েছিল। কিন্তু আজ তাদের পক্ষ থেকে তাদের সেখানে আনার বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে। ফলে তারা আশঙ্কা করছেন আল আমিনকে গুম করা হয় কি না!

রাতে ডিআরইউ'র হল রুমের সামনে বসে কাঁদছিলেন আল আমিনের মা সেলিনা ইসলাম। তিনি বলছিলেন, ‘তারা আমার ছেলেকে ধরলে বলুক কিন্তু অস্বীকার করছে কেন! তার তো কোনো অপরাধ নেই। তাহলে তাকে কেন সিআইডি ধরে আনলো?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে বুকে ফেরত চাই। আমাকে আমার ছেলেকে ফেরত এনে দিন।’

আল আমিনের মামা আরাফাত হোসেন জানান, দুপুর ১২টায় আল আমিনকে রামপুরা ব্রিজ থেকে আটক করা হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে কল করেন তার বোন। পরে তিনি, তার দুলাভাইসহ থানায় যান। গতকাল দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত থানায় থাকলেও তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পরে তারা সিআইডির গাড়ির সাথে আসেন।

আল আমিনের মামা বলেন, ‘ও খুব ভালো ছেলে। ওকে তারা রাস্তা থেকে কেন ধরবে!’

তার বাবা শেখ মেনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ওর মা দুপুরেই জানায়। আমরা গতকাল থেকে তার সাথে দেখা করতে চাচ্ছি। কিন্তু তারা কিছুই বলছে না। আজ নাকি আদালতে তুলবে। কিন্তু সেখানেও আজ সারাদিন খোঁজ নিয়েছি। এ নামে কাউকে হাজির করা হয়নি আদালতে।’

এ বিষয়ে সিআইডির মিডিয়া বিভাগের এসপি আজাদ রহমান  বলেন, ‘এ নামে কাউকে আটক করা হয়েছে কি না তা জেনে জানাতে হবে।’

পরে বাড্ডা থানার ওসি গাজী ইয়াসিন  আল আমিনকে আটকের পর সিআইডির কাছে তুলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবে সিআইডি। কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকলে সিআইডি আমাদের জানায়। পরে আমরা গ্রেফতার করে তাদের বুঝিয়ে দিই।’