ভারতীয় জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া মার্কিন নারীকে ঘিরে রহস্য

ভারতীয় জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া মার্কিন নারীকে ঘিরে রহস্য

ছবিঃ সংগৃহীত।

গাছের সঙ্গে শিকল বাঁধা অবস্থায় এক মার্কিন নাগরিককে ভারতের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করার পর সাত দিন পার হয়ে গেলেও, তার পরিচয়, কী কারণে কে তাকে জঙ্গলে আটকে রাখল, এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা।

পুলিশের কাছে লিখিত বয়ানে ওই নারী অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী তাকে খাবার ও পানি ছাড়াই শেকল দিয়ে বেঁধে জঙ্গলে ফেলে রেখে গেছে। পুলিশ বলছে, তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে তার স্বামীকে খুঁজছে।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ৫০ বছর বয়সী ললিতা কাইকে ভারতে মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গ জেলার একটি জঙ্গলে গাছের সঙ্গে শেকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায়। গত শনিবার রাতে সাহায্যের জন্য তিনি চিৎকার করছিলেন। স্থানীয়রা সাহায্যের জন্য তার চিৎকার শুনতে পান। এরপর পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

তবে শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল থাকায় কায়িকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্বলতার জন্য তিনি ঠিকভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না। এরপর কাই ইংরেজিতে একটি নোট লিখেছেন। 

সেখানে তিনি জানান,‘তার স্বামী তাকে ৪০ দিন আগে একটি লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে এবং কোনো খাবার না দিয়ে রেখে চলে গেছেন।

তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলেও এনডিটিভি জানিয়েছে। তার কাছে কিছু ওষুধও পাওয়া গেছে। তবুও পুলিশ তার স্বামীর সম্ভাব্য হত্যাচেষ্টার তদন্ত শুরু করেছে, যার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পুলিশ তার স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছে। বিষয়টি আরো তদন্তের জন্য তামিলনাড়ু, গোয়া এবং মহারাষ্ট্রে দল পাঠিয়েছে।

পুলিশ বলছে, তার এই দাবিগুলো যাচাই করা যায়নি এখনো। কারণ তাদের বিশ্বাস, খাবার বা পানি ছাড়া কেউ এত দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে না। কাই আরো দাবি করেন, তাকে সাইকোসিসের জন্য একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। ফলে তার চোয়াল অবশ হয়ে যায়। পুলিশ সুপার সৌরভ অগ্রবাল আউটলেটকে বলেছেন, পুলিশ যাচাই করার চেষ্টা করছে দাবিগুলো সত্য কি না।

পুলিশ জানিয়েছে, কায়ি আমেরিকায় ব্যালে নৃত্যশিল্পী এবং যোগব্যায়াম অনুশীলনকারী ছিলেন। ১০ বছর আগে তামিলনাড়ুতে যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অধ্যয়নের জন্য ভারতে এসেছিলেন। সেখানেই স্বামী সতীশের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে পুলিশ কায়ির স্বামীর নাম সতীশ বলে উল্লেখ করেছে। পুলিশ বলছে, কোনো কারণে স্বামীর সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়।

পুলিশ বলছে, তারা মোবাইল ফোন এবং ওই নারীর কাছে পাওয়া ট্যাবলেটের ভিত্তিতেও সূত্র খুঁজছে। দিল্লির মার্কিন দূতাবাস ‘তদন্ত দ্রুত করার জন্য পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।’ কিন্তু তারা এ ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।