রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে ইউক্রেনের সেনারা, জরুরি অবস্থা জারি

রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে ইউক্রেনের সেনারা, জরুরি অবস্থা জারি

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের সেনা সদস্যরা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চল কুরস্কে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের সেনা এখন কুরস্কে ইউক্রেনের সেনার সঙ্গে লড়াই করছে। কুরস্কের কাছে পরমাণু কেন্দ্রে নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন মনে করছেন, ইউক্রেন যা করেছে তা বিশাল একটা উসকানি ছাড়া আর কিছু নয়। কুরস্কের কার্যকরী গভর্নর অ্যালেক্সি স্মিরনভ জানিয়েছেন, তিনি ৭ অগাস্ট থেকে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভিডিও কনফারেন্সে রাশিয়ার চিফ অফ জেনারেল স্টাফ গেরাসিমভ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সেনার একটি ইউনিট কুরস্কে ঢুকে পড়েছে। প্রায় এক হাজার সেনা সেখানে আক্রমণ চালাচ্ছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছে, ‘শত্রুসেনার রাশিয়ার আরো ভিতরে ঢোকার চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে। সেখানে ইউক্রেনের সেনার বিরুদ্ধে অপারেশন চলছে।’

পুতিন জানিয়েছেন, এটা ইউক্রেনের বিশাল উসকানি ছাড়া আর কিছু নয়। ওই এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দেয়া হয়েছে। গভর্নর স্মিরনভ জানিয়েছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আমারা যাবতীয় আক্রমণ প্রতিহত করেছি।’

রাশিয়া জানিয়েছে, কামান ও সাঁযোয়া যান নিয়ে ইউক্রেনের সেনা কুরস্কে রাশিয়ার সীমান্তে হামলা করে। সীমান্তের কাছেই রাশিয়ার দুইটি শহর আছে। ইউক্রেনের সেনা রাশিয়ার সুদঝা শহর পর্যন্ত এসে গেছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। এই শহরই ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস যাওয়ার কেন্দ্র।

পরমাণু কেন্দ্রে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন-
বুধবার সন্ধ্যায় রাশিয়া কুরস্কের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ন্যাশনাল গার্ড নিয়োগ করেছে। এই কেন্দ্র ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে। এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চারটি রিঅ্যাকটার ব্লক আছে। সেখান থেকে দুই গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। কুরস্ক-সহ ১৯টি অঞ্চলে এখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়।

ন্য়াশনাল গার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তর্ঘাত আটকাতে এবং তাদের জমি পুনরুদ্ধার করতে অতিরিক্ত বাহিনী সেখানে পাঠানো হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, সেনা ও এফএসবি ইউনিট মিলে পাল্টা আঘাত হানছে।

মন্তব্য করেননি জেলেনস্কি-
ইউক্রেন স্পষ্ট করে এই আক্রমণের কথা জানায়নি। ইউক্রেনের সেনা বরং বলেছে, রাশিয়া তাদের সীমান্তের গ্রাম আক্রমণ করেছে।

তার দৈনিক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কুরস্ক প্রসঙ্গ তোলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘রাশিয়ার উপর যত বেশি করে চাপ সৃষ্টি করা যাবে, তত তাড়াতাড়ি আমরা শান্তির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারব। আমাদের শক্তির মাধ্যমে শান্তি অর্জন করতে পারব।’

ইউক্রেন কুরস্কের কাছে সুমি এলাকার ২৩টি বসতি থেকে ছয় হাজার মানুষকে সরিয়ে দিয়েছে।

ইউক্রেনের এই হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি আরো ভালো করে বোঝার জন্য আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ইউক্রেন তাদের অপারেশনের বিষয়ে বলবে, সেটাই ঠিক হবে। আমরা চাই, তারা নিজেদের রক্ষা করার বিষয়টির উপর যেন জোর দেয়।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে, আল-জাজিরা