ডায়াবেটিস: নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো জরুরি যে কারণে

ডায়াবেটিস: নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো জরুরি যে কারণে

ছবি: সংগৃহীত

ইনসুলিন হরমোনের মাধ্যমে শরীরের সব কোষে গ্লুকোজ পৌঁছায়। যখন কোনো ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তখন এই হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। একটা সময় মধ্যবয়স্ক বা বৃদ্ধদের মধ্যে এই রোগ দেখা যেত। কিন্তু ইদানীং অল্পবয়সীদের মধ্যেও ডায়াবেটিস হানা দিচ্ছে। 

তৃষ্ণা লাগা, ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়া আর ক্লান্তি লাগা ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ। এগুলো মোটামুটি সবার জানা। কিন্তু এই রোগটির আরও একটি লক্ষণ রয়েছে। তা হলো দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া। রক্তে শর্করার পরিমাণ ওঠানামা করলে তার প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তির ওপরও। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক- 

রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এমন হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায় পৌঁছে গেলে, দৃষ্টিশক্তি একেবারে চলে যেতে পারে।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায়ে চোখের রেটিনায় রক্তবাহী সরু ধমনীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সেই অংশে এক প্রকার ফ্লুইডের ক্ষরণ শুরু হয়। যার কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এর পরবর্তী পর্যায়ে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। রেটিনার বিভিন্ন অংশে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। ফলে চোখে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই সমস্যাকে ভিট্রিয়াস হেমারেজ বলা হয়। নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করালেই এই সমস্যা ধরা পড়বে।

যেসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে না:
-দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে যাওয়া
-কিছু পড়তে বা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হওয়া 
-রং দেখতে সমস্যা হওয়া

হঠাৎ চারদিক অন্ধকার দেখা (কেউ কেউ নির্দিষ্ট কোনো অংশ দেখতে পান না) 
চোখের সামনে পোকার মতো কিছু ঘুরে বেড়াচ্ছে মনে হওয়া বা আচমকা আলোর ঝলকানি লাগা 

সমস্যা সমাধানে করণীয়-
এসব উপসর্গ দেখলেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা সাধারণত বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অ‌্যাঞ্জিওগ্রাফি, চোখের স্ক্যান। লেজার থেরাপি, চোখের ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে দৃষ্টিশক্তি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়।

চিকিৎসকদের মতে, যেসব ডায়াবেটিস রোগী রেনাল প্রোফাইল (ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা), রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাদের চোখের সমস্যা অনেক কম হয়। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ আর শরীরচর্চা করার মাধ্যমে এগুলো ঠিক রাখা সম্ভব। 

নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাও জরুরি। সামান্য অবহেলা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।