অজু পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম ও ফজিলতপূর্ণ আমল

অজু পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম ও ফজিলতপূর্ণ আমল

ছবিঃ সংগৃহীত।

ইসলামে অজু পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম ও ফজিলতপূর্ণ আমল। নামাজ, তাওয়াফ, কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু অবস্থায় থাকা বাধ্যতামূলক। জিকির, তিলাওয়াতসহ অনেক আমল অজু ছাড়াও করা যায়, কিন্তু অজু অবস্থায় করলে সওয়াব বেড়ে যায়। কোনো আমলের উদ্দেশ্য ছাড়াও অজু করা, অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। বিভিন্ন হাদিসে অজু অবস্থায় ঘুমানোরও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন,

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা: ২২২)

অর্থাৎ অজু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। মুমিনের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসার চেয়ে বড় কোনো পুরস্কার নেই।

বিভিন্ন হাদিসে আরও বর্ণিত হয়েছে, অজু করলে গুনাহ ঝরে যায়। অজুর কারণে আল্লাহ বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন, বান্দার মর্যাদাও আল্লাহর কাছে বেড়ে যায়। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

যখন কোন মুসলমান বান্দা অজু করে এবং তার চেহারা ধুয়ে নেয়, তখন তার চেহারা থেকে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার চোখ দিয়ে কৃত সব গুনাহ বের হয়ে যায় যা সে চোখ দিয়ে দেখেছে। যখন সে তার দুই হাত ধৌত করে, তখন তার দুই হাত দিয়ে করা গুনাহ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় যা তার দুই হাত দিয়ে ধরার কারণে সংঘটিত হয়েছে। সে যখন তার দুই পা ধৌত করে, তার পা দিয়ে কৃত গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় যে পাপের জন্যে তার দুই পা হেঁটেছে। এভাবে সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম: ২৪৪)

শীত, বৃষ্টি বা এ রকম কোনো কারণে অজু করা কষ্টকর হলে ওই সময় অজুর সওয়াবও বেড়ে যায়। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন সমবেত সাহাবিদের উদ্দেশে বললেন, আমি কি তোমাদের এমন আমলের কথা বলবো যে আমল করলে আল্লাহ গোনাহসমূহ মাফ করে দেবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? তারা বললেন, ’অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল!’

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,

কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে অজু করা, দূরত্ব অতিক্রম করে মসজিদে যাওয়া, এক ওয়াক্তের নামাজ আদায় করে পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। (সহিহ মুসলিম: ৪৯৪)

তাই প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজের জন্য অজু করা তো অবশ্য কর্তব্য। পাশাপাশি সারাদিনই অজু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করা উচিত। অজু করা উচিত ধীরে-সুস্থে, উত্তমরূপে, তড়িঘড়ি করে দায়সারাভাবে নয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের তওফিক দান করুন!