আন্দোলনের সময় চুপ থাকা নিয়ে আসিফের উদাহরণ টেনে যা বললেন মাশরাফী

আন্দোলনের সময় চুপ থাকা নিয়ে আসিফের উদাহরণ টেনে যা বললেন মাশরাফী

মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রজনতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের অনেক তারকাই। কেবল ব্যতিক্রম ছিলেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এবং সাকিব আল হাসান। কারণ, এই দুইজনই ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তাই শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর তোপের মুখে পড়তে হয়েছে দুই ক্রিকেটারকে। এ ছাড়াও মাশরাফীর বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

সবকিছু নিয়ে দীর্ঘদিন চুপ থাকলেও এবার মুখ খুলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এবং সফল অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটার হিসেবে মানুষের ভালোবাসা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

কোটা আন্দোলনের সময় মাশরাফীর অনেক ভক্তরাই আশা করছিলেন ছাত্রদের পাশে দাঁড়াবেন তিনি। তবে মাশরাফী মনে করে দিয়েছেন, দায়িত্বশীল পদে থাকলে চাইলেও অনেক কিছু করা যায় না। উদাহরণ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দেখালেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে মাশরাফী বলেন, ‘দেখুন, কোটা আন্দোলনের যে ছাত্ররা আছেন বা সমন্বয়কদের একজন, যিনি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন। উনি তো এখন খেলাধুলা সার্বিক বিষয় নিয়ে কাজ করবেন। আল্লাহ না করুক, এখন যদি কোনো সমস্যা হয় বা কোথাও আটকে যান বা বড় কোনো ঘটনা ঘটে।

 ‘তখন তিনি কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনুসের পরামর্শ নেবেন বা সিনিয়র উপদেষ্টাদের মধ্যে কারও সঙ্গে আলোচনা করে, তারপর বিবৃতি দেবেন। কারণ, উনি একটি দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন। হুট করেই গণমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে বা করতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, দায়িত্বশীল জায়গাগুলো থেকে অনেক কিছু চিন্তা করে কথা বলতে হয়। অনেক কিছু সীমাবদ্ধতাও থাকে। হ্যাঁ, ক্রিকেটার মাশরাফীর কাছে মানুষের আবেগ-ভালোবাসার দাবি থাকবেই। ক্রিকেটের কারণেই এত ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু আমি যেহেতু একটা চেয়ারে বসেছিলাম, তাই হুট করে কিছু বলতে পারিনি। বা এখন যারা কাজ করছেন, তারাও হুট করে কিছু করতে পারবেন না।

তবে নিজের সীমাবদ্ধতাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চান না মাশরাফী। তার ভাষ্য ‘হুট করে একটা কথা বলে দিলাম, আর সেই কথা নিয়ে আরও বড় কিছু ঘটে গেল, আর তা সামলানোর ক্ষমতা আমার নেই। এই জিনিস গুলো ভেবে চিন্তে কাজ করতে হবে। হ্যাঁ, আমি ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু আমারও কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল বা আছে। সেটাকে আবার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাচ্ছি সেটাও কিন্তু না।’

শেষ দিকে নিজের ব্যর্থতাকে শিকার করে এই সাবেক অধিনায়ক বলেন, প্রথমত আমি একজন খেলোয়াড়, তারপরে আমি সংসদ সদস্য। নড়াইলের কৌশিক সংসদ সদস্য হতে পেরেছে, সে বাংলাদেশের মাশরাফী হয়েছে বলেই। ক্রিকেটার হিসেবে সেই ভালোবাসার দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছি। তবে সংসদ সদস্য হিসেবে চেষ্টা করেছি বড় পরিসরে কিছু করতে। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছি।