মাদরাসা শিক্ষার্থী হত্যা: হাটহাজারীতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

মাদরাসা শিক্ষার্থী হত্যা: হাটহাজারীতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের গুলিতে হাফেজ রবিউল হোসাইন (২৪) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পুলিশসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন পুলিশের গুলিতে নিহত হাফেজ রবিউল হোসাইনের বাবা আবদুল জব্বার।

রোববার (২৫ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান।

নিহত হাফেজ রবিউল হোসাইন কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়ন মুন্সির হাট বরল্লা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বারের মেজ ছেলে। তিনি হাটহাজারী বড় মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সমাপনী (২০২১ সালের) পরীক্ষার্থী ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের আগে তিনি একটি মসজিদের ইন্টারভিউতে রমজানে খতম তারাবির জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। শুক্রবার মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলায় হাটহাজারী মডেল থানার সাবেক ওসি মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করার পাশাপাশি বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক ও দুই উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর প্রশাসক, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সুনির্দিষ্ট ২৮ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ পুলিশ সদস্য ও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বিকেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বাইতুল মোকাররমে মুসল্লিরা মিছিল বের করে। ওই মিছিলে তৎকালীন সরকারদলীয় অস্ত্রধারী ক্যাডাররা হামলা করে অনেককে হতাহত করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন জুমা নামাজের পর হাটহাজারী মাদরাসা থেকে সাধারণ ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ মিছিল করলে মাদরাসার শিক্ষার্থী হাফেজ মাওলানা রবিউল হোসাইন তার সহপাঠীদের সঙ্গে এ মিছিলে অংশগ্রহণ করে। ওই মিছিল চলাকালে মামলার উল্লিখিত আসামিদের নেতৃত্বে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের (এসআই, এএসআই, কনস্টেবল) সদস্য প্রায় ৫০-৬০ জনসহ ১০০-১৫০ জন দলীয় সন্ত্রাসী অবৈধ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা করে। এর মধ্যে হাটহাজারী মডেল থানার সাবেক ওসি মো. রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা পুলিশ কনস্টেবল থেকে অস্ত্র টেনে নিয়ে নিহত রবিউলের বুকে ও পেটে পরপর ২টি গুলি করে। বুলেটের আঘাতে ওই শিক্ষার্থী মাটিতে পড়ে গেলে অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তার বুকে পরপর আরও ৩টি গুলি করে ঘটনাস্থলেই ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ বিষয়ে নিহতের বাবা আবদুল জব্বার বলেন, ‘আমার ছেলে রবিউল হত্যার সঙ্গে জড়িত উল্লেখিত আসামিদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি প্রশাসনের কাছে। আমি শুধু আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’