আতাইকুলা সড়কে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ

আতাইকুলা সড়কে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ

পাবনার আতাইকুল সড়কের বেহাল দশার চিত্র

পাবনা-টার্মিনাল সড়কের মুজাহিদ ক্বাব থেকে শহরের ঘেয়াঘাট পর্যন্ত মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটির নাম আতাইকুলা সড়ক নাম হলেও মূলত এটি পাবনা-টার্মিনাল সড়ক নামে অভিহিত। কিন্তু সড়কটির বেহালদশার কারণে পথ যাত্রীদের বিভিন্ন যানবাহনে বিড়ম্বনার শেষ নেই।

মুজাহিদ ক্বাব থেকে ইছামতি নদীর খেয়াঘাট পর্যন্ত অধিকাংশ জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত গর্ত, জায়গায় জায়গায় জলাবদ্ধতা, মিনি পুকুর দৃশ্য; যা যেন দেখার কেউ নেই। চরম ভোগান্তিতে  পথচারী ও যানবাহন চালকরা।

বিশেষ করে মুজাহিদ ক্লাব থেকে পাবনার প্রাণ কেন্দ্র পাঁচ মাথা মোড় পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। পাবনা মুজাহিদ ক্লাব দিয়ে পাবনা সদর উপজেলাসহ, সাঁথিয়া, বেড়া, ফরিদপুর, আমিনপুর থানার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে পাবনা শহরে প্রবেশ করেন। মুজাহিদ ক্লাব দিয়ে পাবনার শহরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ অটোরিকশা, অটোবাইক, পণ্যবাহী ভ্যান গাড়ী চলাচলা করে থাকে। এই মুজাহিদ ক্লাবকে শহরে যাওয়ার প্রবেশদ্বার বলা হয়। গাড়ির চালকদের গাড়ি চালাতে চরমভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাস্তাটির বেহালদশার কারণে গন্তব্যে পৌঁছুতে প্রায় নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যায়। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন শত শত কর্মঘন্টা। রাস্তাটিতে ঘটছে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা। অটোচালক, রিকশাচালকরা বলেন, “আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। তারা আরো বলেন, আমরা এমনিতে কষ্টের কাজ করি,রাস্তাগুলো যদি ভালো থাকতো তাহলে আমাদের কষ্ট একটু হলেও দূর হতো। পথচারীরা বলেন, আমরা সময় মতো অফিসে যেতে পারছি না, ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে রাস্তার করুƒণ হালের কারণে। আমরা অতিদ্রুত রাস্তা মেরামত করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন করছি।

মূলত: শালগাড়ীয়ার মুজাহিদ ক্লাব এলাকাটি তুলামূলকভাবে পাবনা জেলা শহরের সব চেয়ে নিচু এলাকা। এক সময় ওই এলাকার বৃষ্টির পানি জড়ো  হতো শালগাড়ীয়া বিল নামক জলাধরে। পানি ধারণ ক্ষমতাও তখন ছিল প্রচুর। কিন্তু কালক্রমে সে সব জায়গার ঘর-বাড়ি গড়ে ওঠেছে। ফলে পানির ধারণ ক্ষমতা সে সব জায়গায় আর নেই। বৃষ্টিজনিত বিশাল পানি রাশি এখন কোনো দিক দিয়ে প্রবাহিতও হতে পারছে না। যার ফলে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানিতে ডুবে যায় মুজাহিদ এলাকার রাস্তাটি।তাই পানির ভিতর দিয়ে যানবাহন চলাচল করলে স্বাভাবিক ভাবেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। শহরের মধ্যস্থল রাস্তাটির পাঁচ মাথার মোড়ের দু’পাশে লাইব্রেরী পট্টি। সেখানকার অবস্থা এতটাই নাজুক অবস্থা না দেখলে বিশ্বাস করানো দায়। সব সময় জলাবদ্ধা থেকেই থাকে এ স্থানে। রাস্তা ভেঙ্গে চুরে গর্ত হয়ে গেছে। সাবধানতা অবলম্বনের জন্য কাগজে সাবধান লেখে লাঠির মাথায় টানিয়ে দেয়া হয়েছে।

শালগাড়ীয়াবাসী সাংবাদিক আঁখিনূর ইসলাম রেমন আফসোস করে বললেন,“ আমাদের দুর্ভাগ্য।” তিনি বলেন,‘এখানে ড্রেন ব্যবস্থা নেই। নেই পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা। যার ফলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ  নেই না।’

এলাকার বেশ কিছু লোক জানালেন,‘ স্বাভাবিক নিয়মে যদি ড্রেন ব্যবস্থা করা সমস্যা হয়; তবে পৌর নাগরিকদের জীবনযাপনের কথা চিন্তা করে  পৌরকর্তৃপক্ষের উচিৎ বিশেষজ্ঞদেরর পরামর্শক্রমে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। 

এব্যাপারে পাবনা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার জিয়াউল ইসলাম বলেন,“বিষয়টি আমাদের নজরে আছে।” তিনি বলেন,‘ওই রাস্তাটির মুজাহিদ ক্বাব এলাকায় বড় সমস্যা হলো এলাকাটি খুবই নিচু। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে সেখানে অনেক উঁচুকরণ করার পর উঁচু ড্রেন করতে হবে।’ যাই হোক পৌর নাগরিকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে পৌর কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ বলে এলাকাবাসীর দাবী।